২৭ মে, ২০২৪ ১৯:৪৩

বড় ক্ষতি থেকে বাঁচাল সুন্দরবন, তবুও সাতক্ষীরায় ৭৯৪টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

বড় ক্ষতি থেকে বাঁচাল সুন্দরবন, তবুও সাতক্ষীরায় ৭৯৪টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় রিমালে সুন্দরবনের কারণে বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় জনপদের মানুষ। প্রতিবারের ন্যায় ক্ষিপ্র বাতাস বুক দিয়ে আগলে রাখায় হতাহতের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মানুষ।

তবে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনিতে কাচা ও পাকা মিলে ৭৯৪টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৩৩টি বসতবাড়ি। গত ২ দিনে ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বর্ষণে ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় দেড় লাখের বেশি মানুষ। 

গত দুইদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপকূলের মানুষ। রিমালের তাণ্ড থেকে উপকূলবাসীকে হতাহত ও বিপুল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষাকবচ হিসাবে বাচিয়েছে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। 

দিনভর ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বেলা ১২টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেটুয়া, চুনা ও কপোতাক্ষ নদে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় গাবুরা বদ্বীপ ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের চাদনীমুখা রিংবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে নিম্নাঞ্চলের বেশকিছু চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় রিমাল উপকূলে আঘাত হানে। রাত ৯টার দিকে ক্ষিপ্রবেগে দক্ষিণ দিক থেকে পশ্চিম দিকে ঝোড়ো হাওয়া প্রবাহিত হলে সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা ভেঙে পড়া গাছ রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেললে সকালে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুল আলম জানান, সুন্দরবনের কারনে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় রিমালের হাত থেকে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত থেকে উপকূলবাসী রক্ষা পেয়েছে। তবে গত দুইদিনে থেমে থেমে বাতাসের সাথে ঝিরি ঝিরি ও প্রবল বৃষ্টিতে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৯৩টি কাচা ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ৪৪৮টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেড়িবাঁধের কোন ক্ষতি না হওয়ায় উপকূলবাসী জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। 

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি আলম নূর জানান, রিমালের আঘাতে আশাশুনিতে ৪০টি কাচা বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া মোট ২৫৩টি কাচাপাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, দুর্গত এলাকায় ৩০ মেট্রিক টন চাউল ও নগদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপকূলের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য টিন ও বরাদ্দের নগদ টাকা দিয়ে তা সংস্কার করা হবে। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর