১০ জুন, ২০২৪ ১৬:৫২

মাছের চেয়ে জাল বেশি!

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

মাছের চেয়ে জাল বেশি!

নদে নেই পানি, না আছে মাছ। তবে অভাব নেই অবৈধ জালের। যেন, ‘মাছের চেয়ে জাল বেশি’! মাছ না মিললেও পুরো নদে অবৈধ ‘চায়না দুয়ারী’ জাল পেতে রেখেছেন জেলেরা। দু’চারদিন পর তুলছেন, তাতে কষ্টের মূল্যও উঠছে না। তবুও পেতে রেখেছেন।

ঝিনাইদহের শৈলকুপার কুমার নদে ছড়িয়ে পড়েছে এই জাল। হালকা ও মিহি বুননের ছোট ফাঁসের এই জালে আটকা পড়ে মারা পড়ছে দেশি মাছ। এই জালে আটকা পড়ে সব প্রজাতির জলজ জীব। স্বল্প ব্যয়ে এবং কম পরিশ্রমে বেশি মাছ ধরতে বিপজ্জনক এই জাল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশি মাছ রক্ষার্থে প্রশাসন বার বার অভিযান পরিচালনা করলেও বন্ধ হচ্ছে না নদে চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মাছ শিকার।

শৈলকুপা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে কুমার নদে ১১ বার অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা মৎস্য অফিস। তাতে ৭ হাজার ৫৪০ মিটার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

সোমবার সকালে মনোহরপুর ঘাটে অভিযান পরিচালনা করে ৮৪টি (১৬৮০ মিটার) চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বনি আমিন।

শুধু নদেই না, অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে হাট-বাজারেও। উপজেলার ভাটই বাজার, শেখপাড়া বাজার, লাঙ্গলাধ বাজার, চড়িয়ারবিল বাজার, শৈলকুপা বাজারসহ বেশ-কয়েকটি বাজারে অবৈধ জাল বিক্রির খবরে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তবে এত অভিযানেও থামছে না অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকার। তাতে হতবাক খোদ মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারাও। তারা বলছেন, ‘অসাধু এসব মাছ শিকারিদের লাগাম টেনে ধরতে কিছুদিন পরপরই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবুও তারা লোভের কারণে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেলেও দু’-চারদিন একটানা পেতে রাখছেন জাল।’

শৈলকুপা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছয় মাসে কুমার নদ ও বিভিন্ন বাজারে ১১ বার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে লাখ লাখ টাকার জাল। তবুও তারা থামছে না। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে এই জাল পাতছেন। কেউ ছাগল বিক্রি করে, কেউ সমিতি থেকে টাকা তুলে এই জাল কিনেছেন। অভিযানে তাদের জাল জব্দ করে পুঁড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত তারাও হচ্ছে। তবুও এই জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করছেন না। তাদের অতি লোভের কারণেই এই জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

শৈলকুপা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বনি আমিন বলেন, ‘বার বার অভিযানেও এই জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ হচ্ছে না। আমরা নদে শুধুমাত্র জাল পাই। মৎস্য আইনে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারিদের জেল দেওয়ার বিধানও আছে। কিন্তু জালের মালিককে পাওয়া যায় না। কেউ স্বীকার করে না এই জাল তার। দু’একজনকে জেল বা জরিমানা করলে অবৈধ জাল পাতা বন্ধ হয়ে যেত বলে মনে করি।’

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর