১১ জুন, ২০২৪ ১৫:২৬

গরুর ছাঁট মাংসই যাদের একমাত্র ভরসা

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

গরুর ছাঁট মাংসই যাদের একমাত্র ভরসা

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে। কিছু কিছু ভোগ্যপণ্যের ক্রয়সীমা অতিক্রম করায় বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বর্তমান বাজরে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা, যা ৬ মাস আগে ৬০০-৬৫০ টাকা ছিল। 

দেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে কিনে খাওয়া স্বাভাবিক মনে হলেও এখন নিম্নআয়ের মানুষের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো। তাদের কাছে গরুর মাংস দুর্লভ ও আভিজাত্যের খাবারে পরিণত। অনেকে মাসেও কিনে খেতে পারেন না গো-মাংস। তাই গরুর ছাঁটকাট উচ্ছিষ্ট মাংসই এখন গরিবের ভরসা। 

এই চিত্র দেখা গেছে, দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে। সামর্থ্য না থাকায়, আর দামে কম হওয়ায় গরুর মাংসের স্বাদ নিতে নিম্নআয়ের কিছু ক্রেতা ঝুকছে এই ছাঁটকাট গরুর মাংস কিনতে।

বীরগঞ্জের মরিচা ইউপির গোলাপগঞ্জ হাট, বীরগঞ্জ পৌর হাটসহ বিভিন্ন হাট বাজারে এই ছাট মাংসের পশরা সাজিয়ে বসেছে কিছু দোকানি। ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে এসব উচ্ছিষ্ট ছাট মাংস পাওয়া যায়।

ছাঁটকাট গো-মাংস বিষয়ে বীরগঞ্জ পৌর বাজারের ব্যবসায়ী রবি মিয়া জানায়, গরুর মাংস বিক্রি হওয়ার পর চর্বি, পর্দা, রগ, মাথার সাইডের হাড় মাংস, নাকের হাড়, ভুড়ির কুস্তাসহ মাংসের উচ্ছিষ্ট অংশ একত্র করে এগুলোই ছাঁট গো-মাংস।

গোলাপগঞ্জ হাটে ছাট মাংস বিক্রেতা শেখ আব্দুল জব্বার জানান, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন কসাইয়ের কাছ থেকে ছাঁটমাংস প্রতিকেজি ২২০-২৪০ টাকা দরে সংগ্রহ করে এবং ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাটে বিক্রি করেন। প্রতিহাটে ২০-২৫ কেজি ছাঁট মাংস বিক্রি হয়। মাংসগুলো কিনতে আসা অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ।
ছাঁট মাংস ক্রেতা, ভ্যানচালক মো. সাফিয়ার জানায়, জায়গা জমি নাই, দিন আনি দিন খাই, কোনদিন ৩০০, কোনদিন ৪০০ টাকা আয় হয়। পরিবারের সদস্য ৫ জন, মেয়ে জামাই বেড়াতে এসেছে, নাতি গরুর মাংস খেতে চেয়েছে কিন্তু গরুর মাংস কিনার সামর্থ্য নেই। তাই দামে কম হওয়ায় নাতিকে নিয়ে হাটে এসেছি ছাঁট মাংস কিনতে।

বীরগঞ্জ পৌরহাটে ছাঁট মাংস ক্রেতা দিনমজুর নাগরু জানান, কোনদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়, আবার কোনদিন কাজ থাকে না। কবে গরুর মাংস খেয়েছি মনে নেই। ৭০০ টাকা কেজিতে গো-মাংস কিনার সার্মথ্য নাই, তাই কমদামে ছাঁট মাংস কিনতে এসেছি।

এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মো. ফরিদ বিন ইসলাম জানান, এই উচ্ছিষ্ট মাংস খাওয়া যাবে না তা না, তবে না খাওয়াই উত্তম। এই উচ্ছিষ্ট মাংস বিক্রি বন্ধে বিভিন্ন হাট বাজারে কয়েকবার অভিযানও পরিচালিত হয়েছে এবং ছাঁট মাংস জব্দ করে পুঁতে দেওয়া হয়েছে এবং ভোক্তা অধিকারের মাধ্যমে কয়েকবার জরিমানাও করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর