শিরোনাম
১৩ জুন, ২০২৪ ১০:৫০

ব্যস্ততা বেড়েছে নওগাঁর কামারপাড়ায়

নওগাঁ প্রতিনিধি

ব্যস্ততা বেড়েছে নওগাঁর কামারপাড়ায়

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

নওগাঁয় ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার সম্প্রদায়রা। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ চাপাতি, চাকু, দা, ছুরি, বটিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। এসব তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পেশাদার কামাররা।

নওগাঁ সদর উপজেলার শিবপুর এলাকায় টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। লোহাকে আগুনে দিয়ে এরপর পিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা রকম রুপ। ঈদকে সামনে রেখে লোহার তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম বানাতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের মধ্যে। কেউ বানাচ্ছেন চাপাতি, কেউ বানাচ্ছেন বটি আবার কেউ বটি নিয়ে ব্যস্ত। দূর দূরন্ত থেকে পাইকাররাও আসছেন লোহার তৈরি এগুলো সামগ্রী কিনতে। 

বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় ঈদুল আযহার কয়েকদিন আগে ব্যস্ত বাড়ে কামারদের। কামারদের সাথে কথা বলে জানা যায়- এক সময় প্রচুর পরিমানে হাতে তৈরি লোহার জিনিসপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল এখন আর তেমন নেই। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই মূলত কিছু কামার এখনও এ পেশায় জড়িয়ে আছেন বলে অনেকে জানান। 

তারা বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় এ পেশায় সাধারণত আয় ও সম্মান উভয়ই কম। তাই আমাদের অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। মেশিনের তৈরি লোহার যন্ত্রপাতি দেখতে সুন্দর ও অধিক ধারালো হয়। এমনকি দাম ও সময় অপেক্ষাকৃত কম লাগে। তাই কামারদের তৈরির জিনিসের চেয়ে মেশিনের তৈরি চাকু, দাঁ, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ক্রমেই বাড়ছে।

কামার উত্তম কুমার (৪৫) বলেন, শিবপুর হাটে আমি প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে ব্যবসা করি। ছোট বেলায় বাবার শেখানো কাজ করেই আমার সংসার চলে। মূলত পাট কাটার সময় লোহার তৈরি হাসোয়া বিক্রি হয়। এছাড়া সারা বছর বলতে গেলে আমাদের কাজ কম থাকে। কোরবানির ঈদের কিছুদিন আগে আমাদের কাজের চাপ বাড়ে। চাকলা,বক্তারপুর, নওগাঁ পৌরসভা, এমনকি জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের কাছে আসে লোহার তৈরি জিনিসপত্র কেনার জন্য। 

তিনি আরও বলেন, আমার এখানে লোহার তৈরি ছুরি, হাসোয়া, বটি, চাপাতিসহ নানা রকম জিনিস আছে বা কেউ এসে অর্ডার দিলে বানিয়ে দিই। আপাতত পাইকারি বিক্রি কমিয়ে দিয়েছি কারণ জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লাভ কম হয়। বড় ছুরি ৫০০- ৬০০ টাকা কেজি, চাপাতি ৫০০ টাকা কেজি, দাঁ ৫০০ টাকা কেজি এবং বটি ২০০- ২৫০ টাকা কেজিতে আমার এখানে বিক্রি হয়। 

কামার সুমন সাহা বলেন, আমি মামার দোকানে থাকি সেই ছোটবেলা থেকেই। বাবা মারা যাওয়ার পড়ে মামা আমাকে কাজের মাধ্যমে পথ দেখিয়েছেন। কোরবানির ঈদে আমাদের ব্যস্ততা বাড়ে কারণ সবারই কমবেশি লোহার তৈরি জিনিসপত্র প্রয়োজন। 

মুরাপুর থেকে আসা আলিম নামের এক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, সাংসারিক কাজে যে লোহার জিনিসপত্র লাগে সেটা শিবপুর থেকে বানিয়ে নিয়ে যাই। সামনে কোরবানির ঈদ, তাই হাঁড়কাটি (চাপাতি) কিনতে এসেছি। মেশিন দিয়ে যেগুলো বানানো হয় সেগুলোর ওজন খুব কম হওয়ায় কাটতে অসুবিধা হয়, তাই লোহার ভারি চাপাতি বানাতে এসেছি।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর