শিরোনাম
৩০ জুন, ২০২৪ ১১:৫২
জানাজা থামিয়ে ঝাড়ফুঁকের আয়োজন

সাপের কামড়ে মৃত ব্যক্তিকে ‘জীবিত করবে’ বলে টাকা নিয়ে কবিরাজ উধাও!

কালিয়াকৈর প্রতিনিধি :

সাপের কামড়ে মৃত ব্যক্তিকে ‘জীবিত করবে’ বলে টাকা নিয়ে কবিরাজ উধাও!

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাপের কামড়ে মৃত এক ব্যক্তিকে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে জীবিত করার কথা বলে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন এক কবিরাজ। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম বাসুরা গ্রামে সাপের কামড়ে মারা যাওয়া সাইফুল ইসলাম নামের এক যুবকের পরিবারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে কড়ি (ছোট শামুকের খোল, যা ওঝা–কবিরাজ ঝাড়ফুঁকে ব্যবহার করেন) আনার কথা বলে পালিয়ে যান ওই কবিরাজ।

পরে কবিরাজের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর গতকাল মধ্যরাতে মৃত যুবককে দাফন করা হয়েছে। মৃত সাইফুল ইসলাম (৪০) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বাসুরা গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে। ওই  ব্যক্তি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে মাছ ধরতে বাড়ির পাশের একটি বিলে যান সাইফুল। পথে তার বাঁ পায়ে সাপে কামড় দেয়। তার সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তি টেঁটা দিয়ে সাপটি মেরে ফেলেন। পরে মৃত সাপটি নিয়ে সাইফুল বাড়িতে ফিরে স্বজন ও এলাকাবাসীকে সাপে কামড় দেওয়ার ঘটনাটি জানান। 

এরপর সাইফুলকে প্রথমে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নেওয়া হয়। ওই কবিরাজের বাড়ি থেকে ঝাড়ফুঁক শেষে রাতেই তাকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মৃত সাইফুলকে শনিবার জোহরের নামাজের পর দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সন্ধ্যা পার হয়ে গেলেও নিহতের স্বজনেরা অন্য এক কবিরাজের আশ্বাসে সাইফুলকে দাফন করতে দেয়নি।

জানা যায়, ওই কবিরাজ নাকি সাত দিনের সাপে কাটা রোগী ভালো করতে পারেন। তার কথা মতে স্থানীয় স্কুল মাঠে ওই কবিরাজ তার সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে কলাগাছ ও কলসি স্থাপন করে নানা আয়োজন করে। মৃতকে চিকিৎসায় ভালো করবে বলে ঝাড়ফুঁকের কার্যক্রম শুরু করে ওই ওঝা। দৃশ্যটি দেখার জন্য দূর-দূরান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃত যুবকের বাড়িতে দিনব্যাপী ভিড় করে উৎসুক জনতা।

ঢালজোড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মনিরুজ্জামান জানান, তবে কবিরাজের ঝাড়ফুঁকে কোনো কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি একটি কড়ি আনার কথা বলে গ্রামের দু’জন লোককে সঙ্গে নিয়ে সাভারের দিকে যায়। কিন্তু সে এখান থেকে যাওয়ার পর বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। এখন যে দু’জন লোক তারা নিয়ে গেছে তাদের জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে আমি মনে করি। তাই আমরা, আমাদের লোকজনদের বলেছি তোমরা নিরাপদে আমাদের কাছে ফিরে আসো। পরে আমরা সাইফুলের জানাজা ও দাফনের কাজ রাতের মধ্যেই সম্পন্ন করা হয়।

বিডি-প্রতিদিন/শআ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর