৪ জুলাই, ২০২৪ ১২:৫৮

হাঁটুপানিতে ডুবে আছে পঞ্চগড়ের হঠাৎপাড়া গ্রাম

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

হাঁটুপানিতে ডুবে আছে পঞ্চগড়ের হঠাৎপাড়া গ্রাম

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

অতি বর্ষণের কারণে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট ও কালভার্ট ভেঙে গিয়ে চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, হাঁটুপানিতে ডুবে আছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার পূর্বজালাশী এলাকার হঠাৎপাড়া গ্রাম। 

টানা বর্ষণ এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সংকটের মধ্যে পড়েছে এই গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার। এই গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রায় ১ মাস ধরে এই অবস্থা বিরাজ করছে।

পঞ্চগড় শহরের অদুরেই পৌরসভা এলাকার একটি গ্রাম হঠাৎপাড়া। উত্তর জালাশী নামেও এই গ্রাম পরিচিত। গত কয়েক সপ্তাহের টানা বর্ষণে এই গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি ডুবে আছে পানিতে। রাস্তাঘাটও হাটু পানিতে ডুবে আছে। গ্রামের বাসিন্দারা হয়ে পড়েছে প্রায় ঘরবন্দি। স্কুল কলেজে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। 

এই গ্রামের পূর্বদিকে অবস্থিত সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া-দেওয়ানহাট সড়কের বলেয়াপাড়া এলাকায় অতি ভারী বর্ষণে কার্লভার্টের পাশে একটি সড়ক ভেঙে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যানবাহনগুলোকে জেলা শহরে আসতে হচ্ছে। 

স্থানীয়রা বলছেন, যে এলাকা দিয়ে পানির চাপ বেশি সেখানে রিং কার্লভার্ট ভেঙে বক্স কার্লভার্ট না করে অনেকটা দূরে একটি বক্স কার্লভার্ট নির্মাণ করা হয়। যার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। আর সড়কের ধার দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করে হঠাৎপাড়া গ্রামের পানি তালমা নদীতে ফেলার উদ্যোগ নেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিগুলোতে অপরিকল্পিত ভাবে ইটের দেয়াল দিয়ে অনেকে জলপ্রবাহ বন্ধ করছেন। এ কারণে যেখানে সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। হাড়িভাসা, টুনির হাট, চাকলা, কালিয়াগঞ্জ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

হঠাৎপাড়া গ্রামবাসীর অভিযোগ, প্রায় সব দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনও রকম প্রতিকার পাননি তারা। এমনকি ২০ /২৫ দিন ধরে পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও গ্রামে পৌঁছায়নি শুকনো খাবারও। পৌরসভার এলাকার গ্রাম হলেও কোনও সুযোগসুবিধা পাননি তারা। কেউ খোঁজও নেননি। 

এই গ্রামের বাসিন্দা ওসমান গণি জানান, তিন/চার বছর থেকে জলাবদ্ধতার সমস্যায় আছি। প্রতিবছর কথা দিয়ে যায় কিন্তু কোনও কাজ হয়না। জলাবদ্ধতা দূর করতে হলে একটি ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। সাপ, পোকামাকড় ঘরে ঢুকে পড়েছে। আমরা খুব সমস্যায় আছি ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, টানা বর্ষনের কারণে সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট, কালভার্ট ভেঙে পড়েছে। সমস্যা সমাধানে আমরা প্রশাসনসহ কাজ করছি। হঠাৎপাড়া গ্রামের সমস্যা সমাধানে পৌরসভা এগিয়ে আসলে ভালো হয়। 

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ প্রধান শুভ জানান, আমরা ইতোমধ্যে যারা খুব সমস্যায় পড়েছেন তাদের বাড়িতে বাড়িতে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। ভেঙে পড়া কালভার্টগুলোতে আপাতত বাঁশের খড়খড়ি দিয়ে নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। গ্রামের জলাবদ্ধতার সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা সম্ভব নয়। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিকল্পনা করে কাজ করা দরকার।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর