শিরোনাম
৫ জুলাই, ২০২৪ ১৬:২০

ফসলি জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাবনায় ক্ষুব্ধ কৃষক

চাঁদপুর প্রতিনিধি

ফসলি জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাবনায় ক্ষুব্ধ কৃষক

চাঁদপুরে হাইমচর উপজেলায় খাস জমি থাকলেও তিন ফসলি জমিতে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার প্রস্তাবনায় এলাকাবাসী ও কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কৃষকরা ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট ফসলি জমি রক্ষার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

সরেজমিনে আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের উত্তর আলগী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রস্তাবিত ফসলি জমিতে অনেক কৃষক কাজ করছেন। চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে হওয়ার কারণে এসব জমিতে বছরে সহজেই একাধিক ফসল উৎপাদিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে হাইমচর উপজেলার লামচরি গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাস জমিতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার জন্য প্রস্তাবনা দেয়া হয়। ওই সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি অবগত না করায় ওই প্রস্তাবনাটি বাতিল হয়ে যায়। এরপর আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের উত্তর আলগী মৌজায় প্রায় ৩.১৯ একর পতিত নাল ভূমি দেখিয়ে স্টেডিয়ামের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। অথচ তিন ফসলি এই মাঠটিই উপজেলার সবচাইতে বড়। কৃষকরা তাদের জমিতে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য খালের উপর ব্রিজ নির্মাণের পর বালু দিয়ে ভরাটের খবর পেয়েই ফুসে উঠে।
উত্তর আলগী গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, এখানে স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে আমাদের ক্ষতি হবে। কারণ এই জমিগুলোতে ৩টি ফসল উৎপাদন হয়। আমাদের ফসল উৎপাদন করেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। আমরা চাই সরকার মিনি স্টেডিয়ামটি ফসলি জমিতে না করে, যেখানে পরিত্যক্ত জমি আছে সেখানে করা হউক। 
ওই গ্রামের যুবক রাব্বি বলেন, এই মাঠের জমিগুলো তিন ফসলি। হাইমচরে অনেক জমি আছে যেখানে একটি মাত্র ফসল হয়। যেখানে অপ্রয়োজনীয় অনেক জমি আছে, সেখানে স্টেডিয়াম নির্মান করা হউক। আমরা স্টেডিয়ামের বিপক্ষে না। কারণ এটি হলে এখানে খেলাধুলার মান বাড়বে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: আল-আমিন বলেন, এলাকার সকল প্রান্তিক কৃষকদের পক্ষে আমি গত ২৩ মে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করি। সেখানে ফসলি জমিতে প্রস্তাবিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম না করার দাবি জানাই। কারণ তিন ফসলি জমিতে এটি করা হলে কৃষকরা ভূমিহীন হয়ে পড়বে। আমরা তখন জেলা প্রশাসককে উপজেলার চরভাঙ্গা মৌজায় স্টেডিয়াম নির্মাণ করার জন্য মতামত দেই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, কৃষকরা যেখানে আপত্তি জানাচ্ছে সেখানে না করে আমাদের ইউনিয়নের লামচরিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে যদি কারো আপত্তি না থাকে করা যেতে পারে।

হাইমচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার বলেন, উপজেলায় যেখানে মিনি স্টেডিয়াম করার প্রস্তাবনা হয়েছে, সেখানকার কৃষকরা আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। যার প্রেক্ষিতে ইউএনও ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছেন। ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী বলেন, যেখানে আমরা স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রস্তাবনা দিয়েছি সেখানে কোন কৃষকের ক্ষতি হবে না বরং এলাকার উন্নয়ন হবে। এছাড়াও ভাল কাজ করতে গেলে কিছু মানুষের সামান্য ক্ষতি হলেও উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের উপকার হবে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর