৬ জুলাই, ২০২৪ ২১:১৪

চাঁদপুরে ৪ পরিবার সমাজচ্যুত

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরে ৪ পরিবার সমাজচ্যুত

চাঁদপুরে মতলব উত্তর উপজেলার মসজিদের ইমামকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে ৪ পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছে এলাকাবাসী।

চার পরিবার হলো জোড়খালি গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির সাইফুদ্দিন, সরকার বাড়ির গোলাম নবী সরকার, জোবায়ের ও মানিক সরকারের পরিবার। এই চার পরিবারে মহিলা, বয়োবৃদ্ধ ও শিশু মিলিয়ে ৩৯ জন সদস্য রয়েছেন। সচেতন নাগরিকের ভাষ্য, সমাজচ্যুত করা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটা দ্রুত নিবারণ করা দরকার।

জানা যায়, স্থানীয় মসজিদের ইমামকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২২ জুন ফেসবুকে একটি মতামত পোস্ট করেন মতলব পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড জোড়খালী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দিন। ওই পোস্টে কমেন্টস করেন একই এলাকার আরও তিনটি পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

ফেসবুকে মতামত পোস্ট করায় ২৯ জুন রাতে মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় বাসিন্দারা সম্মানহানি হয়েছে দাবি করে চার পরিবারকে সমাজচ্যুত করেন। তবে চার পরিবারের সদস্যরা মসজিদ কমিটির কাছে ক্ষমা চাইলে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে বলেও জানানো হয়।  

এমন সিদ্ধান্তের পরপরই শিপন আহম্মেদ নামের স্থানীয় বাসিন্দার ফেসবুক আইডি থেকে সাইফুদ্দিনের ছবি পোস্ট করে তাকে ‘সমাজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে’ বলে প্রচার করা হয়। তারপর থেকে সমাজের লোকজন এই চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা ও চলাফেরা বন্ধ করে দিয়েছে। এদিকে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি করে মানহানির বিচার চান পরিবারগুলো।

সাইফুদ্দিন বলেন, পৌর কাউন্সিলর সবুজ বেপারী গেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তার যোগসাজশে আমাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মসজিদ কমিটি। আমি তো ফেসবুকে কারো নাম নিয়ে পোস্ট করিনি। আমার পোস্টে ছিল-  মসজিদের ইমাম পাল্টানো যায়, ঘুসখোর আর সুদখোর পাল্টানো যায় না। 

সাইফুদ্দিনের পোস্টে মসজিদ কমিটির সম্মানহানি হয়েছে বলে ওই সিদ্ধান্ত এমন দাবি মসজিদ কমিটির সদস্য রুহুল আমিন মিয়াজীর।  তিনি বলেন, ওই বৈঠকে গ্রামের ৮০ থেকে ১শ  সদস্য উপস্থিত ছিল। তখন ৪ পরিবারকে সমাজ থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 ইউপি সদস্য সবুজ ব্যাপারী ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই পরিবার ক্ষমা চেয়েছে। বাকি চার পরিবার ক্ষমা চাইলে এই সিদ্ধান্ত থেকে গ্রামবাসী সরে আসবে।

চাঁদপুর সুজনের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, একজনকে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করার ক্ষমতা সমাজ কাউকে বা সরকার কাউকে দেয়নি। এটাকে যত দ্রুত নিবারণ করা যায়, ততই মঙ্গল। সমাজচ্যুতির বিষয়টি প্রশাসনের শক্তভাবে মোকাবেলা করা উচিত।

মতলব উত্তর থানার ওসি মো: আলমগীর হোসেন রনি বলেন, ইমামকে বিদায় দেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। পরবর্তী ঘটনা জানা নাই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর