১০ জুলাই, ২০২৪ ১৮:০২

পায়ে হেঁটে হজ পালন শেষে বাড়ি ফিরলেন আলিফ মাহমুদ

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

পায়ে হেঁটে হজ পালন শেষে বাড়ি ফিরলেন আলিফ মাহমুদ

পায়ে হেঁটে বিভিন্ন দেশ ঘুরে হজ পালন শেষে একবছর পর কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের শেয়ার বাতাবাড়িয়া গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছেছেন আলিফ মাহমুদ (২৫)। আলিফ মাহমুদ ওই গ্রামের মরহুম আব্দুল মালেকের পুত্র। তার আগমনের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোর থেকে বিভিন্ন এলাকার শত-শত উৎসুক জনতা তাকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান। মরহুম আব্দুল মালেকের ৩ ছেলে ও একমাত্র কন্যা সন্তানের মধ্যে আলিফ মাহমুদ সবার ছোট। 

আলিফ মাহমুদ ২০২৩ সালের ৮ জুলাই নাঙ্গলকোটের শেয়ার বাতাবাড়িয়া গ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করে ১৩ জুলাই ঢাকা পৌঁছেন। এরপর ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে ভিসা সংক্রান্ত কাজে প্রায় দেড় মাস রাজধানীতে অবস্থান শেষে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে হাঁটা শুরু করে ১৯ সেপ্টেম্বর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পৌঁছেন। ভারতে ৬৭টি দিন হাঁটার পর ২৫ নভেম্বর ভারতের ওয়াগাহ সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান পৌঁছেন। পাকিস্তান থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি বন্দর আব্বাস সীমান্ত দিয়ে ইরান পৌঁছেন। ইরান থেকে ২৭ জানুয়ারি আরব আমিরাতে পৌঁছেন। আরব আমিরাতের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে আবুধাবীর শিলা সীমান্ত দিয়ে সৌদি আরব পৌঁছেন। সর্বশেষ সৌদি আরবে ৪ মাস ১৪ দিন থাকার পর ওমরাহ ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৭ মে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় চলে যান। ইথিওপিয়া থেকে ২৩ মে পুনরায় পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব পৌঁছেন। এছাড়াও, আলিফ মাহমুদ ২০২২ সালে সাইকেল চালিয়ে ৪১ দিনে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেন। 

আলিফ মাহমুদ বলেন, ২০২৩ সালের ৮ জুলাই আমি আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে দীর্ঘ ৯ মাসে পায়ে হেঁটে সৌদি আরব পৌঁছে পবিত্র হজ পালন করে ২০২৪ সালের ৮ জুলাই একবছর পর বাড়িতে এসে পৌঁছতে পেরেছি। এ দীর্ঘ পথযাত্রায় আমি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, আরব আমীরাত ও সৌদিআরব এই ৬টি দেশের প্রায় ৭ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেছি। প্রতিদিন আমি ৪০-৫০ কিলোমিটার হেঁটেছি। এর মধ্যে আরব আমিরাতের দুবাই থেকে আবুধাবি পৌঁছতে একদিনে সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার হেঁটেছি। আমি হাঁটতে গিয়ে এসব দেশের কালচার আমি দেখেছি এবং তাদের সাথে মিশার সুযোগ পেয়েছি এবং শুধু মুসলিম নয় অন্যান্য ধর্মের লোকও আমাকে দেখতে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি পবিত্র ভূমিতে গমনের জন্য আমার এ ত্যাগ দেখে নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও আমাদের ধর্মের প্রতি অন্যধর্মের লোকেরা অনুপ্রাণিত হয়েছে, এটাই আমার সব ছেয়ে বড় পাওয়া। আমার ইচ্ছা আমি বিশ্ব ভ্রমণ করবো এবং আফ্রিকার দেশগুলোসহ বিশ্বব্যাপী দ্বীনের দাওয়াত দিবো। এছাড়া আমি স্বপ্ন দেখি আমি আমার এলাকায় দরিদ্র ও পথ শিশুদের জন্য একটি স্কুল ও মাদরাসা এবং তাদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল স্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।  

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর