১১ জুলাই, ২০২৪ ১৮:১২

গাইবান্ধায় আবারও বেড়েছে নদ-নদীর পানি, বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় আবারও বেড়েছে নদ-নদীর পানি, বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে কমেছে করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি।

গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটাসহ চার উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হতে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র এবং ঘাঘট নদীর পানি। পানি কমতে থাকায় ফিরতে শুরু করেছিলেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা। তবে পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন বানভাসিরা। এখনো বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকার জেগে উঠা এলাকা আবারও প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এতে দুচিন্তায় পড়েছে বন্যা কবলিত পরিবারগুলো।

জেলায় এখনো পানিবন্দি ৪০ হাজারেরও বেশি পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। আবারও পানি বৃদ্ধির ফলে দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না বন্যা দুর্গতদের। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পানি কমার সাথে সাথে ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে কয়েকটি এলাকায়। লোকজন আতঙ্কে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। এবারের বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, কাউন ও আমন বীজতলাসহ ২ হাজার ৫০০ হেক্টরের অধিক জমির ফসল। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। পানি ওঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায়  ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তার নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি ২২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে গেল ৫ জুন পর্যন্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি সর্বোচ্চ ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নাঞ্চল এবং নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ। চলমান বন্যায় চার উপজেলায় দুই হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, উজানে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় নদ-নদীর বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্র এখনো বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাবে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবারসহ নগদ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। সরবরাহ করা হচ্ছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ চিকিৎসা সামগ্রী। এছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় মেডিকেল, কৃষি, স্বেচ্ছাসেবক এবং লাইভস্টোক টিম কাজ করছেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর