১২ জুলাই, ২০২৪ ১৯:৩০

গাইবান্ধায় কমেছে নদ-নদীর পানি, কমেনি দুর্ভোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় কমেছে নদ-নদীর পানি, কমেনি দুর্ভোগ

গাইবান্ধায় সব নদ-নদীর পানি কমেছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৩৫ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৭ সে.মি. হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ৮ সে.মি. হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সে.মি., তিস্তার নদীর পানি ২৯ সে.মি. হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৬৩ সে.মি. ও করতোয়া নদীর পানি ৭ সে.মি. হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১২৭ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি কমায় গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটাসহ চার উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ির প্লাবিত এলাকায় কমেনি বানভাসিদের দুর্ভোগ।

জেলায় এখনও পানিবন্দি হয়ে রয়েছে ৪০ হাজরেরও বেশি পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ওপরে থাকায় দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না বন্যা দুর্গতদের। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পানি কমার সাথে সাথে ভাঙনও দেখা দিয়েছে কয়েকটি এলাকায়। লোকজন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। এবারের বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, কাউন ও আমন বীজতলাসহ ২ হাজার ৫০০ হেক্টরের অধিক জমির ফসল। ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। পানি ওঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এরআগে, গত ৫ জুন পর্যন্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি সর্বোচ্চ ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ। চলমান বন্যায় চার উপজেলায় দুই হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজি পানিতে তলিয়ে গেছে।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র এখনো বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাবে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবারসহ নগদ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। সরবরাহ করা হচ্ছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ চিকিৎসাসামগ্রী। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর