১৪ জুলাই, ২০২৪ ১৬:৫৯

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত, ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ওপরে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত, ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ওপরে

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপবির্তীত রয়েছে। জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পেলেও এখনো বিপৎসীমার ১০ সে.মি ওপরে রয়েছে। পানি কমেছে ঘাঘট ও তিস্তা নদীর। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তা রয়েছে বিপৎসীমার নিচে। বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকা এখনো নিমজ্জিত রয়েছে। এতে হতাশ আর দুচিন্তায় পড়েছে বন্যা কবলিতরা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা।

দ্বিতীয় দফায় বন্যায় জেলায় এখনও পানিবন্দি হয়ে রয়েছে ৪০ হাজরেরও বেশি পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভূট্টা, বীজতলা ও শাকসবজিসহ ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর কৃষি জমির ফসল। পানি কমা বাড়ার ফলে গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্যায় নিমজ্জিত থাকা জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল পাট খাতে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন, তিল, কালাই, বাদাম, ভূট্টাসহ অন্যান্য শাকসবজিরও। ক্ষতি হয়েছে মৎসখাতেও। সব মিলিয়ে জেলার অর্থনীতিতে ঘাটতি ১০০ কোটি টাকারও বেশি। পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ।

রবিবার বিকেল ৩টায় গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায়  ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ২ সে.মি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ৪০ সে.মি ও তিস্তার পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি ১২ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০৪ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলায় বন্যায় আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজিসহ ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর কৃষি জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ৬৬ হাজার ৮৬৯ জন কৃষক। কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি ৭৫ থেকে ৮০ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে ৯৬ দশমিক ৪৭ হেক্টর আয়তনের ৪৫৭টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার টাকা মূল্যের বড় মাছ, ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার পোনা ও ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এতে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটাসহ চার উপজেলায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ৩৪৭ জন মৎস্য চাষি। অন্যদিকে প্রায় ২০ লাখ গবাদি পশু ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ব্রহ্মপুত্র এখনো বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে সপ্তাহের মধ্যে জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, বানভাসিদের মধ্যে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। সরবরাহ করা হচ্ছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ চিকিৎসা সামগ্রী।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর