১৫ জুলাই, ২০২৪ ২০:৫৮

বগুড়ায় পানিবন্দি ৫৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া:

বগুড়ায় পানিবন্দি ৫৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টির কারণে বগুড়ায় গত কয়েক দিন ধরেই যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রচবাহিত হচ্ছে। বগুড়ার তিন উপজেলার ৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে ৪৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত ১০ দিন ধরে শ্রেণি কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমে গেলে আবারও শুরু করা হবে শ্রেণি কার্যক্রম।

বগুড়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী জানান, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় একটি মাদ্রাসাসহ মোট আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় মোট ৪৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব স্কুলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শিক্ষকদের প্রতিদিন স্কুলের খোঁজখবর নিতে হবে এমন  নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, তিন উপজেলায় বন্ধ ঘোষণা করা ৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোথাও হাঁটু এবং কোথাও কোমর পানি উঠেছে। অনেক শিক্ষার্থী পানিবন্দি হয়ে পড়ার কারণে পরিবারের সঙ্গে অন্য জায়গায় গিয়ে থাকছে। সারিয়াকান্দি উপজেলায় পানিবন্দি হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হলো-চর আগ বোহাইল, পৌতি বাড়ী, চর মাঝিরা, চর মাজবাড়ী, নয়াপাড়া, চকরথিনাথ, বয়রাকান্দি, ঘুঘুমারি, ঘুঘুমারী দক্ষিণপাড়া, কেষ্টিয়ারচর, পাকুরিয়ার চর, বেনীপুর, চর দিঘাপাড়া, ময়ূরের চর, গজারিয়া, কাশিরপাড়া, কুড়িপাড়া, চরবাটিয়া, চর চালুয়াবাড়ী, পার দেবডাঙ্গা, দক্ষিণ হাটবাড়ী, নিজতিত পরল, করমজাপাড়া, শিমুলতাইড়, ধলির কান্দি, ভাঙ্গড় গাছা, বহুলা ডাঙ্গা, বিরামের পাঁচগাছি, আউচারপাড়া, উল্লাডাঙ্গা, চর দলিকা, মানিক দাইড়, বেড়া পাঁচবাড়িয়া, ধারা বর্ষা, চর ডাকাত মারা, চর কর্ণিবাড়ী, দক্ষিণ শংকরপুর, শংকরপুর, পাকেরদহ এবং উত্তর টেংরাকুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পানিবন্দি হওয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো হলো-উত্তর টেংরাকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, আওচারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বোহাইল উচ্চ বিদ্যালয়, জামথল উচ্চ বিদ্যালয় এবং শোনপচা উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়া গত কয়েকদিন আগে উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনের শিকার হয়। ফলে বিদ্যালয়টি নিলাম দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এ বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম এখন অন্যত্র চালানো হচ্ছে।
এ উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ঘুঘুমারি এলাকার কাশেম আলী জানান, স্কুলে এবং বাড়িতে পানি ওঠায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। গরু-ছাগল নিয়ে এক সঙ্গে থাকি। ছেলের পড়ালেখা কি করে হবে।
এদিকে সারিয়াকান্দী, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৮০ হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, পানিবন্দি হওয়ার কারণে সারিয়াকান্দি উপজেলার ৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমলেই আবারও যথানিয়মে শ্রেণি কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, সোমবার বিকেলে যমুনা নদীর পানি বিপনসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় পানি কমেছে ১২ সেন্টিমিটার। এখন পানি কমতে শুরু করেছে।
 
বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর