১৬ জুলাই, ২০২৪ ১৯:৩৬

কুড়িগ্রামে কৃষিতে ১০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকার ক্ষতি

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামে কৃষিতে ১০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকার ক্ষতি

কুড়িগ্রামে চলতি ২য় দফা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে। বন্যার পানিতে নিজেদের ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হলেও ফসল তলিয়ে কৃষকরা হাহাকার। সাধারণ কৃষকের জন্য চাষাবাদ এখন ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি নিয়ম কানুনের বেড়াজালে সাধারণ কৃষক প্রণোদনার বাইরেই থেকে যান। ফলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়। তারপরও পরিবারের সদস্যদের কথা বিবেচনায় রেখে এসব কৃষককে ধার-দেনা করে নতুন করে উদ্যোগ নিতে হয়। 

চলতি বছর ব্রহ্মপূত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে গত ১৫ দিন ধরে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। এর ফলে জমিতে রোপনকৃত রোপা আমন বীজতলা, আউশধান, পাট, শাকসবজি, মরিচ, তিল, চিনা, কাউন, কলা, আখ, আদা, হলুদ সম্পূর্ণ তলিয়ে গিয়ে বিনষ্ট হয়। 

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণর বিভাগ জানায়, এবছর ৩৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয় তম্মধ্যে বন্যাকালিন এলাকায় অবস্থিত ৪ হাজার ৯৮৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পুর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়। এতে ৬ হাজার ৩৩৪ জন কৃষকের ১০৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়। সরকারিভাবে কিছু প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হলেও সাধারণ অনেক কৃষককে থাকতে হয় এ সুবিধার বাইরে।

সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের নয়ানীপাড়ার শশীকান্তের স্ত্রী সুনতী রানী (৪৮) জানান, এক বিঘা জমির ধান দিয়ে দুজনের পেট পুরণ করতে হয়। এবার এক হাজার টাকা খরচ করে ৩ শতক জমিতে বীজতলা লাগিয়েছি। বন্যায় সব শেষ। আমরা কখনো সরকারি সুবিধা পাই না।একই গ্রামের শ্যামল চন্দ্র জানান, প্রতিবছর আমাদের এখানে প্রায় ৪ একর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। আমিও এবার নাগেশ^রী থেকে একহাজার টাকা খরচ করে ৫ কেজি বিছন ধান কিনে জমিতে লাগিয়েছি। সব শেষ। কোনদিন শুনিনি বা দেখিনি এই এলাকায় কেউ প্রণোদনা দেয়। সদর উপজেলার বেলগাছা কালিরহাট গ্রামের কৃষক জিতেন্দ্রনাথ সরকার জানান, কৃষি বিভাগ তাদের নিজস্ব কিছু কৃষককে প্রতিবছর প্রণোদনার সুবিধা দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে যাদের জমি রাস্তার পাশে রয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়। এখানে ধনী-গরিব দেখা হয় না। ফলে যাদের প্রণোদনা দরকার তারা সবসময় বঞ্চিত থাকে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বন্যায় এবার ৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়। তবে পুরোপুরি ক্ষতি হবে না। তবে আমরা বন্যায় ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ৪শ কৃষককে আমন বীজ প্রদান করেছি। এছাড়াও আসছে রবি মৌসুমে কৃষকদের তালিকা করে প্রণোদনা দিয়ে তাদরে ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর