নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ সুমন রহমান অনিক মারা গেছেন।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই জুলহাস মিয়া।
নিহত সুমন মাধবদী পৌর শহরের সিদ্দিকনগর মহল্লার মৃত হাসেন আলীর ছেলে। সে স্থানীয় জালপট্টি জামেয়া-ই-এমদাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন।নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় ভাই তিন বোনের মধ্যে সুমন সবার ছোট। আগামী বছর তার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। পরিবারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি সে ভাইদের সঙ্গে স্থানীয় বাজারে কাঁচা তরকারি বিক্রি করতো। গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সরকারের জারিকৃত কারফিউয়ের প্রথমদিনে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সুমন। গুলি তার পেটে ঢুকে পাকস্থলি ছিদ্র হয়ে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তার তিনবার অস্ত্রোপচার করা হয়। সম্প্রতি তার পেটে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ার কারণে আবারও অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছিল চিকিৎসকরা। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তারা। গত বুধবার বিকালে তাকে কুর্মিটোলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই শুক্রবার সকালে সে মারা যায়।
নিহতের বড় ভাই জুলহাস মিয়া বলেন, ভাইটা আমার ৩৩ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শহীদ হল। অনেক কষ্ট হয়েছে তার। চোখের সামনে সব দেখেছি। আমরা গরীব মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে বেশি টাকা না লাগলেও ওষুধ কিনতে কিনতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। শান্তনা এতটুকুই ভাইটা দেশের জন্য শহীদ হল। ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আল্লাহ বেহেশত নসিব করেন।
বিডি প্রতিদিন/একেএ