শিরোনাম
২৫ আগস্ট, ২০২৪ ১৩:৪২

বগুড়ায় বিচারকের উপর হামলা প্রতিবাদে হামলাকারীকে গণধোলাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় বিচারকের উপর হামলা প্রতিবাদে হামলাকারীকে গণধোলাই

ফাইল ছবি

বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (অর্থঋণ আদালত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ রবিবার বেলা ১০টায় জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত নাজির শাহীন ইকবাল সাবেক ছাত্রলীগ নেতার পরিচয়ে ওই বিচারকের খাস কামরায় এ হামলা করেন। 

এসময় আদালতের সেরেস্তাদার ও জারিকারকরা ঘটনার প্রতিবাদে শাহীন ইকবালকে গণধোলাই দেয়। এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। ফলে বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চর হয়। এমন ঘটনায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব (যুগ্ম জেলা জজ) শরিফুল আলম ভূইয়া নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এমন ঘটনা কারও জন্য কাম্য নয়। 

জানা যায়, গত ২২ আগস্ট বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে বগুড়া বিচার বিভাগের কর্মচারিরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা বগুড়ার বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলামকে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করেন। এদিকে, আইন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম রব্বানী আশ্বাস দেন দুই বিচারককে প্রত্যাহার করবেন। 

ওইদিন সকাল সোয়া ১০টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বেলা ১২টায় আদালত প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে কর্মচারীরা বগুড়া জেলার প্রধান বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এই ঘটনার পর আজ রবিবার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের উপর হামলা করা হয়। শাহীন ইকবাল নামের এক নাজির উক্ত হামলার ঘটনা ঘটায়। এসময় বিচারক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে রক্তাক্ত হয়। তার এমন অবস্থা দেখে একদল জারিকারক ও সেরেস্তাদারদের নেতৃত্বে শাহীন ইকবালকে গণধোলাই দেয়া হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদালতের এক বিচারক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শাহীন ইকবাল নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দাবি করে আদালতে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দিতেন। তার ব্যবহারে অনেকেই তাকে পাগল বলতেন। হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত বিচারককে শুধু মারধরই করেননি। ওই বিচারককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে শাহীন ইকবাল এর বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব (যুগ্ম জেলা জজ) শরিফুল আলম ভূইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কোনও অন্যায়কে সাপোর্ট করা যাবে না। এই হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দানীয়। যদি তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থেকে থাকে তাহালে প্রধান বিচারপতি আছেন তার কাছে অভিযোগ দিতে পারতেন। একজন বিচারকের উপর হামলা অবশ্যই নিন্দানীয়। এটি রাষ্ট্রের জন্য কখনই মঙ্গল নয়। 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর