একসময় ভালো বেতনের চাকুরি করতেন। কিন্তু চাকরি করার চেয়ে নিজে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে সবজি চাষে নেমে পড়েন। প্রথম বছরের সবজি চাষ করে বাজিমাত করেছেন তিনি।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া গ্রামে করলা চাষ করে সফল হয়েছেন শিক্ষিত যুবক রফিকুল ইসলাম তুহিন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ফলনও পেয়েছেন আশানুরূপ। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা তার। স্নাতক পাশ তুহিন একসময় ভালো বেতনে চাকুরি করতেন। পরে সিদ্ধান্ত নেন নিজস্ব মেধাশক্তি ও পরিশ্রম কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হবেন। সেকারণেই গত বছরের নভেম্বরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজ এলাকায় কৃষি চাষাবাদ শুরু করেন।
কৃষক তুহিন বলেন, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এ বছর আমি অন্যান্য সবজির সঙ্গে করলা চাষ শুরু করি। গাছ বেড়ে ওঠার জন্য পুরো খেতে মাচা তৈরি করে দিয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করায় ফসলে রোগবালাই কম হয়। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় করলা চাষে লাভ বেশি। যে কারণে বাড়ির পাশের ২০ শতাংশ জমিতে এ বছরের এপ্রিলের শুরুতে উন্নত জাতের করলা চাষ শুরু করি। সবমিলিয়ে আমার চাষাবাদে খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। মে মাসের মাঝামাঝি সময় ফলন শুরু হয়েছে। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায় করলার ফলন ভালো হয়েছে।তুহিন আরও বলেন, করলা পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাজারে দামও ভালো। বাজারে চাহিদা থাকায় পাইকাররা খেত থেকেই কিনে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমি করলা বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকা আয় করেছি। আরও ২০ হাজার টাকার করলা বিক্রি করার আশা রয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, করলা বছরের যেকোনো সময় চাষ করা যায়। এ সবজি চাষে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন খুব কম হয়। এ ছাড়া রোগবালাইও কম হয়। এজন্য ধান কিংবা অন্যান্য মাঠ ফসলের তুলনায় করলা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ার কারণে সারাবছর বাজারে চাহিদা থাকে। তিনি বলেন, তুহিন একজন সফল সবজি চাষি। তিনি শসা, মরিচ, পেঁপে চাষেও সফলতা দেখিয়েছেন। উন্নত পদ্ধতিতে করলা চাষেও সফল হয়েছেন। তুহিনের সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকও অনুপ্রাণিত হবেন। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল