২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার। রাত সাড়ে ১২টা। গোমতী নদীর পানির চাপে ভেঙে যায় কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া অংশের বাঁধ। এ বাঁধ ভাঙা পানিতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় মুজিবুর রহমান লিয়াকতের সাতটি ফার্ম ঘর। সব কিছু হারিয়ে গত এক সপ্তাহ পরিবারপরিজন নিয়ে নদীর বাঁধে থাকেন লিয়াকত। ছিলেন একজন সফল পোল্ট্রি খামারি। ১৮ হাজার মুরগির ফার্ম হারিয়ে তিনি এখন পথে বসেছেন।
লিয়াকতের বাড়ি বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া গ্রামের মধ্য পাড়ায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নদীর বাঁধ ভাঙা পানি প্রথম আঘাত হানে তার বাড়িসহ সাতটি ফার্ম ঘরে। বাঁধের ভাঙা অংশে নদীচরে একটি ফার্ম ঘর পানির স্রোতে তছনছ হয়ে গিয়ে পড়ে আছে ৫০০ গজ দূরে। বাকিগুলোর প্রায় একই অবস্থা? কোনোটা ভেঙ্গে পড়ে আছে। কোনটা পানির স্রোতে হেলে গেছে।
লিয়াকত বলেন, প্রবাসে ছিলাম। ৫০টি মুরগি দিয়ে শুরু হয় আমাদের ফার্মের ব্যবসা। তারপর থেকেই ব্যবসা বৃদ্ধি হতে থাকে। এখন পর্যন্ত আমার সাতটি ফার্ম ঘরে গড়ে তুলেছিলাম ১৮ হাজার মুরগি দিয়ে। যার মধ্যে ৮ হাজার ডিম পাড়তো। সব মিলিয়ে আমার ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।স্থানীয়রা জানান, লিয়াকতসহ তারা সবাই পানির স্রোত থেকে জীবন বাঁচাতে এক কাপড়ে নদীর বাঁধে উঠে এসেছেন। বাড়ি থেকে কিছুই আনতে পারেননি। প্রবল স্রোতে তলিয়ে গেছে বুড়বুড়িয়ার সব মানুষের বাড়ি-ঘর।
লিয়াকত আরো বলেন, দেড় বছর আগে আমি বিদেশ থেকে এসে এ সাতটা খামার গড়ে তুলি। আমার জীবনের সব সঞ্চয় এখানে ঢেলে দিয়েছি। কিছু টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি। এখন আমি পুরোপুরি পথে বসে গেছি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, আমরা বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করছি। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে খামারিদের পুনর্বাসন করার। সেটা হতে পারে স্বল্প সুদে ঋণ বা নেয়া ঋণের সুদ কমানো ইত্যাদি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল