শিরোনাম
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:১৯

ফুসফুসে গুলি নিয়ে কাতরাচ্ছে রাশেদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ফুসফুসে গুলি নিয়ে কাতরাচ্ছে রাশেদ

৪ আগস্ট দুপুর ১২টার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিরাসার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়। এতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া। তার বুকের মধ্যে দুটি গুলি ঢুকে যায়। অপারেশন করে একটি বের করা হলে অন্যটি এখনও বুকের ফুসফুসের মধ্যে আটকে রয়েছে। এক কঠিন যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে রাশেদ। তবে তার উন্নত চিকিৎসা খুবই প্রয়োজন। জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তার সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। 

জানা যায়, জেলা শহরের দারুল কোরআন আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা নাজারাত শাখার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া গুলিবিদ্ধ হলে প্রথমে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তার অপারেশন হলে একটি গুলি বের হলে অন্যটি বের করতে পারেনি চিকিৎসকরা। পরে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে রাশেদ। পরবর্তীতে আবার নতুন করে ব্যথা শুরু হলে গত ২২ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসায় ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খুবই দরিদ্র পরিবারে সন্তান রাশেদ মিয়া। রাশেদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় তার উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তার নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছে স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী বায়জিদুর রহমান জানান, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রাশেদের পারিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না। আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। এছাড়া রাশেদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার ফুসফুসের অপারেশনটি অত্যন্ত ক্রিটিকাল। শিক্ষার্থী তৌসিফ আহমেদ জানান গুলিটি তার ফুসফুসে মধ্যে আটকে আছে। দ্রুত অপারেশন করে বের না করা হলে তার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। 

গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রাশেদ মিয়া জানান, সহপাঠীদের সাথে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। গুলি লাগার পর আর কিছু বলতে পারি না। তবে অপারেশন করে একটি বের হলে আর একটি গুলি বুকের মধ্যে রয়েছে। ফলে অনেক কষ্ট হচ্ছে। 
শিক্ষার্থীর মা মঙ্গলি বেগম ও ভাই মোঃ খুবাইব জানান, আমরা খুবই গরিব। টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন। ছাত্ররা এগিয়ে আসায় রাশেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কেেলজে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. এ.কে.এম মুরাদ জানান, তার বুকের ফুসফুসে মধ্যে একটি গুলি এখনও আটকে রয়েছে। আটকে থাকা গুলি থেকে ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর