৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:৪৮

ব্রহ্মপুত্রের স্মরণসভা!

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ব্রহ্মপুত্রের স্মরণসভা!

ময়মনসিংহ নগনেরর বুক চিড়ে বেয়ে গেছে রুগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদ। তাইতো মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্রের স্মরণে স্মরণসভা করেছে ‘সুন্দর শূন্য কিলোমিটার’ নামের একটি সংগঠন। শুক্রবার ময়মনসিংহ নগরের কাচারিঘাট এলাকায় নদের পাড়ে এই কর্মসূচি আয়োজন করে সংগঠনটি। গানে-সুরে ও নানান সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের ওই স্মরণসভায় ফুটে ওঠে নদের খনন কাজের অনিয়ম। প্রতিবাদী সেসব কণ্ঠে ফুটে ওঠে মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি।

‘নদীর জীবন্ত স্বত্ত্বাকে টিকিয়ে রাখতে দখলে নয় বরং নদীটিকে লালনে, জলাশয়টিকে পরিচর্যায়। তাই নদীগুলোকে ফিরিয়ে দিতে, চাই তার পুরনো সীমানা। রাক্ষস খেলো আমাদের কলরব, আমাকে দাও স্রোতের জীবন’- এতসব স্লোগান নিয়ে শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই কাচারিঘাটের বালুচরে জড়ো হতে থাকে ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষেরা। চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।

প্রথমে কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া এবং জিলাপি বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয় ব্রহ্মপুত্রের স্মরণসভা নামে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ। এরপর মৃতপ্রায় নদকে স্মৃতিচারণ করা হয় কথা, কবিতা-গানে গানে। এ সময় নদী খননের নামে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যসহ নদীর গতিপথকে যারা বদলে দিচ্ছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়।
 
সংগঠনটির কর্ণধার কবি শামীম আশরাফ জানান, আমরা ধরে নিয়েছি ব্রহ্মপুত্র মরেই গেছে। তাই স্মরণসভা করার জন্য আমরা এসেছি। নদটিকে মেরে ফেলার বিরুদ্ধে সুরে সুরে, গানে গানে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা দাবি জানাই, খননের নামে যারা লুটটপাট করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। সেই সাথে ব্রহ্মপুত্রকে পুরোনা সীমানা ফিরিয়ে  দিতে হবে।

এর আগে গত বছরের ৫ মে নদের হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে ‘মৃতের চিৎকার’ লেখা ব্যানার টানিয়ে প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে অতীত যৌবনা ব্রহ্মপুত্রের বিরহগাঁথা তুলে ধরেন এই তরুণ সংস্কৃতিকর্মীরা। 

প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে পাঁচ বছর মেয়াদি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খনন প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ ২ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের খননকাজ শুরু করে। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত কাজের সময় বাড়ানো হয়। গাইবান্ধা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ এই পাঁচ জেলায় নদের ২২৭ কিলোমিটার অংশের কোনো কোনো এলাকায় খনন শেষ, কোনো এলাকায় কাজ চলছে, আবার কোনো এলাকায় কাজ শুরুই হয়নি।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর