২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:০৮

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, বন্যার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

তিস্তার পানি বিপৎসীমার 
উপরে, বন্যার শঙ্কা

রংপুরে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে রংপুরের গঙ্হাচড়া, কাউনিয়া উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষেতের আমন ধান, মরিচ, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। স্থানীয়দের মতে, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বড় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর ১২টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। এর আগে বেলা ৩টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটারে পানি প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছায় বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, অসময়ে বন্যা পরিস্থিতি হওয়ায় আমন ধান ও আগাম আলুসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হেেয়ছে। ফলে কৃষকের কপালে হাত পড়েছে। 
কাউনিয়া উপজেলায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢুষমারা, তালুক শাহবাজ, পূর্ব নিজপাড়ার অংশ, গোপীডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর প্রাননাথ, শনশনিয়া, চর হয়বতখাঁ, চর গনাই, আজমখাঁর চর ও নতুন করে চর নাজিরদহ ও নাজিরদহ গ্রামের নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে প্রায় এক হাজার পরিবার।

কাউনিয়া বালাপাড়া ইউনিয়ন এর ঢুষমারা চর ও পাঞ্জর ভাঙ্গা এলাকার মেম্বার মোঃ শাহ আলম বলেন, তার এলাকায় পানি প্রবেশ করায় কয়েক শতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। 
গঙ্গাচড়া উপজেলা গজঘন্টা ইউনিয়নের মিজানুর রগমান জানান, তার এলাকা আগাম আলুর ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ব্য্যঅপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকে আগাম ধান কেটে বাড়ির উঠানে রেখেছিল। সেই সব ধানও ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। 

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি সমতল রংপুর জেলার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটর। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তি ২ দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অপরদিকে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রংপুর বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ— আপার আত্রাই, আপার করতোয়া, পূনর্ভবা, ঘাঘট, ইছামতি-যমুনা ও যমুনেশ্বরী নদী সমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে টাঙ্গন নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর