৯ নভেম্বর, ২০১৯ ১৮:৫১

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল: জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন কলাপাড়ার মানুষ

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল: জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন কলাপাড়ার মানুষ

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় সাগরপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাট করছে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের মাইকিং, সাইরেন বাজানোসহ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রশাসনিক নির্দেশে শনিবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে থাকে। বিশেষ করে মসজিদের মাইকের প্রচারে মানুষ বেশি মনযোগ দিয়েছেন। তবে দুপুরে আবারও তারা ক্ষেতে যান। আবার কোন কোন আশ্রয়কেন্দ্রে ফের মানুষ দুপুরের পরে ছুঁটছে আশ্রয় কেন্দ্রে। বিশেষ করে সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙা লালুয়ার চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়াসহ নয়টি গ্রামের মানুষ দিশেহারা হয়ে ছুঁটেছে আশ্রয় কেন্দ্রে। একই অবস্থা গঙ্গামতির বেড়িবাঁধের বাইরের দেড় হাজার পরিবারের সদস্যদের। এ উপজেলায় ২৪৭টি গ্রামের মানুষ রাতের জোয়ারে ঘুূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে আতঙ্কে প্রতিটি মুহূর্ত পার করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, অন্তত ৮০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৬৬ হাজার মানুষ শনিবার সকালে আশ্রয় নেন। তিনি সকাল থেকে রাবনাবাদ পাড়সহ গঙ্গামতির বির্স্তীর্ণ জনপদে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছেন। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজনের নিরাপত্তাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে যাওয়া লালুয়ার চারিপাড়াসহ নয়টি গ্রামের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করার কথা জানালেন সেখানকার চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস। সকাল নয়টার দিকের এক দফা জোয়ারের তাণ্ডবে কুয়াকাটায় দুই শতাধিক অস্থায়ী দোকানপাট ক্ষতির শিকার হয়েছে। অনেকে সরিয়ে নিয়েছেন। সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। পায়রা বন্দরের পুনর্বাসনসহ সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ করে শ্রমিকদের ছুটি দেয়া হয়েছে। পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অন্তত সাড়ে নয় হাজার বাঙালি এবং চীনা শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয়েছে। 

কলাপাড়া পৌর শহরের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, রাতের জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতির আগেই মালামাল সরাচ্ছেন। কৃষকরা ক্ষেতের আমন হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। তবে এবার প্রশাসনের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতিতে অনেকটা স্বস্তিও রয়েছে মানুষের মনে। 

কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন বিপু জানান, বেড়িবাঁধের বাইরের অন্তত তিন হাজার দোকানির অধিকাংশই দোকানের মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।

কলাপাড়া ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান খান জানান, উপজেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ১৫৮টি ইউনিটের ২৩৭০ সদস্য মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান জানান, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় বেড়িবাঁধের বাইরের প্রায় সাত হাজার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে। 

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর