১১ মার্চ, ২০১৯ ১২:১২

"রাতেই ব্যালটে সিল মারা হয়ে গেছে"

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাকসুর সহসভাপতি প্রার্থী নুরুল হক নুরু (মাঝে)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও (ডাকসু) ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের ছায়া পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নুরু। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছে।

সোমবার সকালে কুয়েত মৈত্রী হলে গিয়ে সিল মারা ব্যালট দেখিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যায়ের বর্তমান প্রশাসনকে দলকানা। এই প্রশাসনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

হাতে থাকা কয়েকটি জালভোটের ব্যালট পেপার দেখিয়ে নুরুল হক নুরু বলেন, এই যে দেখুন কুয়েত মৈত্রী হলে জাতীয় নির্বাচনের মতো আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছে। ছেলেদের হলগুলোতে এমন বিশৃঙ্খলা অবস্থায় রাখা হয়েছে যে, কে ভোট দিয়েছে বা কে দেয়নি তা শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও অভিযোগ করে তিনি বলেন, সকালে রোকেয়া হলে প্রার্থী ও সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এর পর শহীদুল্লাহ হল, এসএম হলে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে যেসব গেস্টরুম, হলরুম রয়েছে, সেখানে তাদের অপরিচিত মুখকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এসব গণরুম, গেস্টরুমে যারা থাকেন, তাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। যারা ভোট দিয়ে এসেছেন, তাদেরই আবার ভোটারদের লাইনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসব কর্মীকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, প্রতিটি ভোটের জন্য তারা যেন ১০-১৫ মিনিট সময় নষ্ট করে আসেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন ভোট দিতে না পারে বা বিরক্ত হয়ে চলে যায় এমন পরিকল্পনাতেই এসব করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রশাসনের কাছে এসব অভিযোগ বিষয়ে কথা বলেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসন একটি মেরুদণ্ডহীন দলকানা, যাদের কাছে ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তির রাজনীতিটাই বড়।

প্রশাসন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীর কোনো দাবিই মানেনি জানিয়ে তিনি বলেন, হলে ভোটকেন্দ্র করার কথা বলেছিলাম, সেটি মানেনি প্রশাসন। জাতীয় নির্বাচনের মতো স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স ব্যবস্থা করেনি তারা।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। একটানা দুপুর ২টা পর্যন্ত এ ভোটগ্রহণ চলবে। এতে ৪৩ হাজার ২৫৬ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। মোট ভোটারের মধ্যে ছাত্র ২৬ হাজার ৯৪৪ এবং ছাত্রী ১৬ হাজার ৩১২ জন।

ডাকসুতে ২৫ পদে নির্বাচন হচ্ছে। বিভিন্ন পদের মধ্যে আছে ভিপি, জিএস, এজিএস একটি করে ৩টি। আরও আছে- সম্পাদকীয় ৯টি এবং ১৩টি সদস্যপদ। এসব পদের জন্য বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্রসহ প্রার্থী ২২৯ জন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্রসহ ভিপি ২১, জিএস ১৪ জন।

ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ১৩টি প্যানেল। অন্যদিকে প্রত্যেক হল সংসদে ১৩টি পদে নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে ভিপি, জিএস, এজিএস একটি করে তিনটি। আরও আছে সম্পাদকীয় ৬, সদস্য ৪টি। হল সংসদ (১৮টি হল, ২৩৪ পদে) প্রার্থী ৫০৯ জন। হল সংসদ ও ডাকসু মিলিয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে গড়ে ৩৮টি করে ভোট দিতে হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোটের কাজ শেষ করতে রিটার্নিং অফিসারসহ (আরও) ৪২ জন কাজ করছেন।

বিডি প্রতিদিন/১১ মার্চ ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর