অর্ধশত বছর হলো লিখতে লিখতে শেষ...
কি লেখেছি কেউ না জানুক; জানে আমার দেশ।
ভাষার একুশ, সবুজ পাতা, স্বাধীনতার লাল...
উজান-ভাটা, হাওয়ায় ওড়া নায়ের রঙিন পাল...
মায়ের ব্যথা, ভায়ের স্মৃতি, বোনের মায়ামুখ...
লাটাই-ঘুড়ি, কিশোরবেলা, যুদ্ধজয়ের সুখ...
আবেগমাখা নিঃসর্গ আর শিশিরভেজা মাঠ...
এসব নিয়েই আমার লেখা-সহজ-সরল পাঠ।
বেতস-ঝোপের ডাহুক চেনে আমার গানের সুর...
জানে আমার প্রাণের ভাষা ঝরনা, সমুদ্দুর...
দুপুরবেলার উপুড় হওয়া সূর্য জানে সব-
সাঁঝের ঝিঁঝিঁ জানে আমার সৃষ্টি-কলরব।
আলোর পাখি নীলজোনাকি, ভোরের সবুজ ঘাস
জানে আমার মনের ভাষা লেখার ইতিহাস।
মউলবনের জোছনা জানে, জানে পারুল ফুল-
দখিন হাওয়া জানে আমার বুকের হুলুস্থূল!
ইমলিপাতার ইলিকঝিলিক, ভুরুই পাখির ঝাঁক...
টাপুর-টুপুর মেঘের নূপুর, তাতানো বৈশাখ...
পলাশফোটা ফাগুনবেলা, শাপলাফোটা ঝিল-
জানে আমার হƒদয়কথন, ছন্দ-অন্ত্যমিল
কি লিখেছি কেউ না জানুক, জানে আমার দেশ;
দেশকে নিয়ে আজো আমার হয়নি লেখা শেষ।
দেশের মাটি, বনবনানি, পাহাড়, নদীর ঢেউ...
এরাই বুঝুক আমার লেখা; নাইবা বুঝুক কেউ!