শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আমি আর সুকুমার

লুৎফর রহমান রিটন

আমি আর সুকুমার

যে পেয়েছে শৈশবে সুকুমার রায়কে

তার মজা আজীবন, তাকে আর পায় কে!

লাল মলাটের বই মাঝে অই ম্যাঁও-টা

বেড়ালটা কতো প্রিয়! আমি তার ন্যাওটা!

 

শৈশবে কৈশোরে ফ্যান্টাসি বেশুমার

শৈশব রাঙালেন জাদুকর সুকুমার।

পায়ে পায়ে ছায়া হয়ে পিছু নেয় ফুর্তি

গড়েছেন অপরূপ অদ্ভুত মূর্তি!

ঘাটে ঘাটে ঘটে কতো কাণ্ড ও কীর্তি

সুকুমার ছাড়া কেউ শৈশবে ফিরতি?

 

 

আমাদের ছেলেবেলা সুকুমার সঙ্গী

কতো তার অবয়ব কতো তার ভঙ্গি!

‘রামগরুড়ের ছানা’ ‘হেশোরাম হুঁশিয়ার’

একসাথে বেড়ে উঠি আমি আর সুকুমার।

‘কাঠবুড়ো’, ‘হুঁকোমুখো’, ‘কানে খাটো বংশী’

একেকটা ভয়াবহ! কী যে বিধ্বংসী!

কাকে ছেড়ে কাকে ধরি বলবো কি বাপু রে

বলে ‘ভয় পেও না’ গো ‘বাবুরাম সাপুড়ে’।

‘কুমড়োপটাশ’ আর ‘কিম্ভুত’, ‘খিচুড়ি’

নেই রে তুলনা তার নেই কোনো কিছুরই।

‘আবোল তাবোল’ শুনে ‘ঝালাপালা’ কানটা?

শুনে নিতে পারো তবে ‘হিংসুটি’ গানটা।

‘দাশুর খ্যাপামি’ দেখে মনে লাগে খটকা?

‘খাই খাই’? ‘কিছু চাই’? ফোটে ‘চীনেপটকা’!

‘শব্দ কল্প দ্রুম’-এ কুপোকাৎ ছাত্র

‘ছায়াবাজি’ ‘গোঁফচুরি’ আর ‘সৎপাত্র’

‘পাগলা দাশু’কে চেনো? ‘কাতুকুতু বুড়ো’কে?

মাঞ্জা কে শিখিয়েছে ‘ব্যোমকেশ’ খুড়োকে!

 

সুকুমার নাচালেন ছন্দের বাহারে

আহারে ‘দ্রিঘাংচু’! ‘ট্যাঁশগরু’ আহারে...

‘হ য ব র ল’কে দেখে হেসে ওঠে সজারু

সুকুমার আছে তাই দুনিয়াটা মজারু।

 

সুকুমার আছে তাই আমিও যে আছি রে

আমি আর সুকুমার থাকি কাছাকাছি রে!

সুকুমার সবখানে গোঁফে আর দাঁড়িতে

বুড়ো হয়ে গেছি তবু পারি নাই ছাড়িতে!

জীবনটা কেটে যায় হাসি-গানে-রঙ্গে

ভাগ্যিস সুকুমার ছিলে তুমি সঙ্গে!

মুছে দিয়ে জীবনের গ্লানি আর হাহাকার

একসাথে বেঁচে থাকি আমি আর সুকুমার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর