দুই ঘরের মাঝখানে একটা ছোট্ট গাছ। সেই গাছে বাসা তৈরি করছে টোনা আর টুনি। এমন সময় একটা বেড়ালছানা এলো। তারা ফুড়ুত করে উপরের ডালে গিয়ে বসল।
বেড়ালছানা হেসে বলে, আরে, আমাকে দেখে ভয় পাও নাকি? আমি এই বাড়িতেই থাকি। আমি এ বাড়ির শিশুদের সাথে খাই, ঘুমাই, খেলা করি আর তাদের অনেক উপকার করি।
টুনি বলে, তুমি আবার উপকার করতে পার নাকি!বেড়ালছানা বলল, উপকার না করলে কি বাড়ির সবাই আমাকে কোলে পিঠে করে রাখে। তোমরা আমাকে বন্ধু মানতে পার। আমি থাকতে তোমাদের কেউ কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আমি তোমাদের উপকার করতে চাই। এ কথা বলে বেড়ালছানা চলে গেল।
টোনা আর টুনি বাসা তৈরি করল।
টোনা বলে, ভালোই হলো। আমরা ভালো বন্ধু পেয়ে গেলাম। টুনি বলল, বেড়াল বড় বজ্জাত প্রাণি। তাকে বিশ্বাস করা মোটেও ঠিক হবে না।
এত খারাপ হলে কি আর তাকে বাড়ির লোকেরা আদর করে? বলল টোনা।
কদিন পরে বেড়ালছানাটি এলো। টোনা বলল, আমাদের দুটি ফুটফুটে ছানা হয়েছে। আমরা অনেক খুশি।
বেড়ালছানা বলে, তাই নাকি! আমিও খুশি। আমি ছানা দুটির জন্মদিনের অনুষ্ঠান করব। সবাইকে দাওয়াত করব।
টুনি বলে, না, না, তুমি কাউকে বলো না। বললে খুব বিপদ হবে আমাদের।
বেড়ালছানা বলল, আমি থাকতে তোমাদের কোন বিপদ হবে না। আমি ওদের দেখেশুনে রাখব। দাও দেখি ছানা দুটি আমার হাতে, ওরা কেমন চটপটে হলো, একটু দেখি।
টুনি বলল, না না, ছানারা এখনো খুব ছোট। আরও বড় হলে দেব, এখন না।
টোনা বলল, আহা দাও না। হাতে নিয়ে দেখুক আমাদের ছানারা কত সুন্দর হয়েছে।
টোনা জোর করে ছানা দুটি নিয়ে বেড়ালছানার হাতে দিল।
বেড়ালছানা আদর করছে। তারপর হঠাৎ চিঁ চিঁ কান্না শুরু করে দিল ছানা দুটি ।
আরে! একি, ছানারা কাঁদছে কেন? দেখে, বেড়ালছানা ছানাগুলো খাওয়া শুরু করে দিল।
টোনাটুনি পাগলের মতো উড়ে এসে ধরল বেড়ালছানাকে। ঠোকরে ঠোকরে কাবু করে ফেলল।
বেড়ালছানা দৌড়ে ঘরের চালে গিয়ে বসল। টোনাটুনি সেখানে গিয়েও ঠোকরাতে লাগল ; বেড়ালছানার চোখ নষ্ট হয়ে গেল। ছানাগুলো ফেলে পালালো সে। টোনাটুনি আহত ছানা দুটি নিয়ে চলে গেল অন্য এক বনে। টুনি বলল, শক্রুকে বিশ্বাস করলে পদে পদে বিপদে পড়তে হয়।