শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফড়িং থেকে হেলিকপ্টার!

ফড়িং থেকে হেলিকপ্টার!

ফড়িং একটি পতঙ্গের নাম। পুকুর, ডোবা, কিংবা জলাভূমির কাছে নির্জন জায়গায় এদের ওড়তে কিংবা গাছের ডালপালায় নিশ্চল বসে থাকতে দেখা যায়। ফড়িংয়ের সরু লম্বা শরীর, মাথা, বুক এবং উদরে বিভক্ত। মাথাটি গোল, এদিক-ওদিক ঘোরাতে পারে। খুব ছোট একটি সূক্ষ্ম শুঁড় আছে। ফড়িংয়ের উদর অংশ নরম, লম্বা ও নলের মতো। এই নলাকার অংশের শেষ প্রান্তে আড়াআড়িভাবে একটি ছিদ্র থাকে। এর সাহায্যে বর্জনীয় বস্তু দেহ থেকে নির্গত করে। বুকের কাছে দুই জোড়া পাতলা, খসখসে, অর্ধস্বচ্ছ ডানা আছে। দেহের সঙ্গে আড়াআড়ি ওপরের দিকে আবদ্ধ। ডানা সব সময় প্রসারিত অবস্থায় থাকে। কখনো ভাঁজ করতে পারে না। খুব জোরে ডানা নাড়াতে পারে, এ জন্য ওড়ার সময় ডানা থেকে শব্দ হয়।

ফড়িংয়ের ডানাগুলো বেশ লম্বা। দেহের সঙ্গে ডানাগুলোর খুব ছোট সংযোগ আছে। ডানার বাইরের দেহের প্রান্ত সোজা এবং ভিতরের প্রান্ত গোলাকার। গঠন-কাঠামো দৃঢ় ও কার্যকর করার জন্য পাতলা ডানায় জালকের মতো সূক্ষ্ম শিরা বিন্যাস থাকে। এতে বাতাসের চাপে ডানাগুলো ছিঁড়ে যায় না, উড়ন্ত অবস্থায় দেহের ওজনের সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকে। উড়ন্ত অবস্থায় খুব দ্রুত নির্দিষ্টভাবে ডানাগুলো সঞ্চালিত হয়। ফড়িংয়ের ডানাগুলো পায়ের সঞ্চালন দিয়ে পরোক্ষভাবে নড়াচড়া করে। এ ছাড়া বুকের পেশির সঞ্চালন দ্রুত ডানা নাড়াতে সাহায্য করে। পায়ের বিশেষ সঞ্চালনের জন্য ফড়িং স্থির অবস্থা থেকে হঠাৎ ওড়তে পারে। ফড়িং প্রতি সেকেন্ডে ১০ মিটার গতিতে ওড়তে পারে। ওড়ার সময় হঠাৎ বাতাসে স্থির হয়ে দ্রুত সঞ্চালিত ডানার সাহায্যে ভেসে থাকতে পারে। আবার দিক পরিবর্তন করে বিপরীত দিকেও দ্রুত ওড়ে যেতে পারে।

ফড়িং দেখেই বিজ্ঞানীরা হেলিকপ্টার তৈরি করেছিলেন। হেলিকপ্টার আবিষ্কারের ইতিহাস থেকে জানা গেছে, এই অদ্ভুত আকাশযান সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা প্রথম শুরু হয়েছিল ফ্রান্সে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ‘এটিয়েন উইমিচেন’ প্রথম পরীক্ষামূলক হেলিকপ্টার তৈরি করেছিলেন। তারপর নানা গবেষণার মাধ্যমে হেলিকপ্টারের গঠন, কাঠামো বিশেষ প্রপেলারের ব্যবস্থা, স্বল্প পরিসরে সহজে ওঠানামা, নিশ্চল অবস্থা থেকে আকাশে ওড়া ইত্যাদির যে উন্নতি ও পরিবর্তন ঘটেছে তার সবটাই ফড়িংয়ের শরীরের গঠন ভঙ্গিমা থেকে পরিকল্পিত হয়েছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর