শুক্রবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মিমের পাখি

নুরন্নবী খোকন

মিমের পাখি

মিম ও তার বাবা-মায়ের যতেœ কয়েকদিনের মধ্যেই পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠল। এ কদিনে মিমের সঙ্গে পাখিটির খুব ভাব হয়ে গেছে। স্কুল থেকে ফিরে মিম পাখিটিকে খাবার পানি দেয় আর গল্প শোনায়

 

মিমের বয়স আট বছর। সে বাবা-মায়ের খুব আদরের মেয়ে। একদিন বিকালে মিম দেখল তাদের বাড়ির বাগানের পেয়ারা গাছের নিচে একটি খুব সুন্দর পাখির বাচ্চা পড়ে আছে। মিম কাছে গিয়ে দেখল বাচ্চাটির পালক ছেঁড়া, একটা পায়ে আঘাতের চিহ্ন। সে বাচ্চাটিকে ওড়ার জন্য ইশারা দিল। কিন্তু পাখির বাচ্চাটি উড়াল দিতে তো পারলই না, হাঁটতেও পারল না, আগের মতোই বুক চিতিয়ে শুয়ে রইল। পাখির বাচ্চাটি দেখে মিমের খুব মায়া হলো। মিম তখন বাচ্চাটিকে মায়ের কাছে ধরে নিয়ে গেল। মিমের মা পাখি বাচ্চাটিকে দেখে রেগে গিয়ে বলল, এটা ঘরে এনেছ কেন? যাও যেখান থেকে এনেছ সেখানে রেখে এসো। মিম বলল পাখিটা অসুস্থ ও উড়তেও পারছে না, হাঁটতেও পারছে না মা। মিমের মা আরও রেগে গিয়ে বলল, যাও তাড়াতাড়ি রেখে আসো। অসুস্থ পশুপাখি থেকে আমাদের দেহেও রোগ ছড়াতে পারে। মিম নাছোড়বান্দা, সে কিছুতেই পাখিটিকে ফেলে আসতে দেবে না, তার মন খুব খারাপ হলো। এরই মধ্যে মিমের বাবা বাড়ি এসে সব শুনে বলল, আচ্ছা মামণি আমরা পাখিটিকে সুস্থ করে তুলব। বাবার কথা শুনে মিম খুব খুশি হলো। মিমের বাবা পাখিটিকে দেখে বলল, বাঃ খুব সুন্দর পাখি তো! এরপর পাখিটিকে ভালোমতো পরিষ্কার করে, পায়ের ক্ষত জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দিল। এরপর পাখির জন্য খাবার পানি দেওয়া হলো। কুকুর-বিড়ালে যাতে না খায় তার জন্য একটি ঝুড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা হলো। মিম ও তার বাবা-মায়ের যতেœ কয়েকদিনের মধ্যেই পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠল। এ কদিনে মিমের সঙ্গে পাখিটির খুব ভাব হয়ে গেছে। স্কুল থেকে ফিরে মিম পাখিটিকে খাবার পানি দেয় আর স্কুলের গল্প শোনায়। স্কুলে কার কার সঙ্গে মিমের ভাব আর কার কার সঙ্গে মিমের আড়ি সব। মেয়ের এসব কান্ডকারখানা দেখে মিমের বাবা-মা হাসাহাসি করে। একদিন ঝুড়িটি আলগা পেয়ে পাখিটি উড়ে গেল, মিমের ভীষণ মন খারাপ হলো। মিমের বাবা-মা মিমের মন ভালো করার খুব চেষ্টা করল কিন্তু কিছুতেই মিমের মন ভালো হচ্ছিল না। মিমের বাবা বলল, আচ্ছা আমরা আমাদের বাগানে সব গাছে একটি করে ঝুড়ি ঝুলিয়ে দেব পাখিদের বাস করার জন্য। তখন আরও অনেক পাখি আসবে। মিমের মন ভালো করার জন্য কথামতো কাজ হলো। নতুন বাসা পেয়ে হরেকরকম পাখির আনাগোনা শুরু হলো। বিভিন্ন জাতের পাখি ভিন্ন ভিন্ন রঙের পাখি। কোনোটা কালো, কোনোটা হলুদ আবার কোনোটা সবুজ রঙের। এদের ডাকও ভিন্ন ভিন্ন। এসব দেখে মিমের মন ভালো হয়ে গেল। সে এখন স্কুল থেকে এসে পাখিদের সঙ্গে সময় কাটায় আর স্কুলের গল্প শোনায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর