শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাঁদের চোখে মেঘ

আশতাব হোসেন

চাঁদের চোখে মেঘ

সূর্যের আলোতে চাঁদ আলোকিত হয়েও তার গর্বের শেষ নেই। এক পূর্ণিমার রাতে চাঁদ গর্বভরে বলে- আমি সবার সেরা, আমি সারা রাত জেগে আঁধার তাড়িয়ে পৃথিবীর সবাইকে আলো দিয়ে উপকার করে থাকি। আমি আলো না দিলে পৃথিবী একেবারেই অচল হয়ে যেত।

 

একদল মেঘ চাঁদের নিচে দিয়ে যেতে এই গর্বের কথা শুনে ফেলে বলে- না না তা হতে পারে না, আমরাই সবার সেরা, আমরা খন্ড খন্ডভাবে উড়ে যেতে যেতে যেখানে পানির অভাব হয় সেখানে গড়গড়িয়ে পানি ঢেলে দেই। আমরা বৃষ্টি বর্ষণ না করলে সব মরে তামাতামা হয়ে যেত। নদী শুকিয়ে গিয়ে গরু, ছাগল ভেড়ার চারণভূমি হয়ে  অস্তিত্ব হারাতো। আর সাগরের দেমাগও মরে মরুভূমি হতো। আমরা মেঘেরা ঘুরে ঘুরে পানি ছড়িয়ে দেই বলেই আজ সবার রক্ষা।

 

চাঁদ তখন রেখে গিয়ে বলে, আরে মেঘের দল এসব বাজে গল্প আমার কাছে না বলে যেখানে যাচ্ছিলে সেদিকের পথই ধর। তোমাদের বাহাদুরি করার দরকার নেই, একবার আকাশে এসে বিজলী এক ভেংচি দিলেই সব পালিয়ে বাঁচিস আবার বড় বড় কথা!

 

আমার উজ্জ্বলতা দেখেওতো অনেক সময় রাস্তা ছেড়ে চুপসে যাও। চাঁদের গর্বভরা এমন ভারি ভারি কথা শুনে মেঘের দল খুব রেগে গিয়ে বলে আচ্ছা বাপু দেখা যাবেনে। এই বলে মেঘের ছোট দলটি আকাশে বিচ্ছিন্নভাবে বেহুদা ঘুরে বেড়ানো ছোট ছোট মেঘের ঝাঁকের সঙ্গে মিটিং করে, তাদের অপমানের কথা তুলে ধরে। চাঁদের অহংকারী কথাগুলো শুনে সবাই মিলে এক জোট বাঁধে এবং চাঁদকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য কাঁধে কাঁধ রেখে এক প্রতিজ্ঞা করে। তার পর এক শুক্ল পক্ষের যে তিথিতে ভরা পূর্ণিমা লাগে সেই সময় মেঘের বিশাল বিশাল ঝাঁক এসে চাঁদকে আস্তে আস্তে ঘিরে ফেলে।

 

চাঁদ এমন অবস্থা দেখে একেবারে ঘাবড়ে যায় এবং নিজের যা আলো আছে তা সব ছড়িয়ে দিয়ে বাহাদুরি রক্ষার খুব চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারে না। ছোট ছোট মেঘের ঝাঁকগুলো একত্রিত হয়ে চাঁদকে আঁধারে ডুবিয়ে উল্লাস করতে থাকে। চাঁদের চোখে মেঘ জমা হয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর