১ আগস্ট, ২০১৯ ১৭:০২

পাহাড়ে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক, মহামারি ম্যালেরিয়া

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক, মহামারি ম্যালেরিয়া

ডেঙ্গু জ্বরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ে। এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখনো ছয়। তবে প্রকট আকারে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী। লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এ রোগীর সংখ্যা। 

চিকিৎসকরা বলছেন, ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যুর সংখ্যা একে বারে নেই। নতুন করে ডেঙ্গু রোগী যুক্ত হলেও আতঙ্কিত না হওয়ার পরার্মশ সংশ্লিষ্টদের।
 
রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে যখন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তে রোগীর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ।  তখন পাহাড়ে মারাত্মক প্রকট রূপ নিচ্ছে ম্যালেরিয়া। দিন দিন বাড়ছে এ রোগের রোগীর সংখ্যা। এরই মধ্যে এ রোগের ভয়াবহতা তীব্র হয়ে উঠেছে জেলার বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল ও বিলাইছড়ি উপজেলায়। 

চলতি বছরে শুধু জুন ও জুলাই মাসে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৫ জন। যা মহামারি হিসেবে বিবেচনা করছে সংশ্লিষ্টরা। 

এ ব্যাপারে রাঙামাটি সিভিল সার্জেন ডা. শহীদ তালুকদার বলছেন, রাঙামাটিতে প্রতি বছর ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এবছরও জেলার কয়েকটি উপজেলার মানুষ ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে এ রোগীর সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৬২৪জন। ২০১৭ সালে ৮ হাজার ২৮৭ জন এবং  ২০১৮ সালে ছিল ৩ হাজার ১৪ জন। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত শুধু ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ২৮৮ জনকে। তবে এখন পর্যন্ত ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। শুধু ম্যালেরিয়া রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জেলা-উপজেলায় গঠন করা হয়েছে চিকিৎসকের বিশেষ টিম। এদিকে গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদেরও। 

অন্যদিকে রাঙামাটিতে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। বর্তমানে সবাই রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এতে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ে। একদিকে লাগামহীন ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব, অন্যদিকে ডেঙ্গু জ্বরের শঙ্কা। সবমিলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষগুলোর মধ্যে উদ্বেগ-উকণ্ঠা বিরাজ করছে। 

জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. শওকত আকবর বলছেন, রাঙামাটিতে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। রোগীদের মধ্যে দুইজন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছিল। বাকি চারজন রাঙামাটি শহরের। 

আক্রান্তরা হলেন, রাঙামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার সোমা চাকমা (১৭), শহরের বনরূপা এলাকার আদিত্য চাকমা (২০), দক্ষিণ কালিন্দাপুর এলাকার তোজিকা দেওয়ান, মাতৃমঙ্গল এলাকার ইকবাল হোসেন (২৭), টিটিসি’র সৈকত চাকমা (২২), ও জ্ঞান বিকাশ চাকমা (৩০)। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত সবারই চিকিৎসা চলছে। গঠন করা হয়েছে চিকিৎসকদের বিশেষ টিম। 

অভিযোগ রয়েছে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো ইউনিট খোলা হয়নি। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে তাদের চিকিৎসা সেবা। তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রোগীরা।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর