৯ জুলাই, ২০২৩ ১১:১০

জটিল হচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি: টিআইবি’র ১৫ সুপারিশ

অনলাইন ডেস্ক

জটিল হচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি: টিআইবি’র ১৫ সুপারিশ

ফাইল ছবি

শরীরে তীব্র জ্বর সাব্বিরের (৭)। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছে। হাতে ক্যানোলা পুশ করে স্যালাইন দেওয়া আছে। সাব্বিরের বাবা জাহিদ হোসেন বলেন, চার দিন আগে ছেলের জ্বর এলে ডেঙ্গু টেস্ট করাই, পজিটিভ আসে। এর মধ্যে ছেলে প্রচ- পেটব্যথায় চিৎকার শুরু করলে হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। শয্যা না থাকায় মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা চলছে।  

রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা, যথাযথ পরিকল্পনা, পূর্বপ্রস্তুতি ও কার্যকর বাস্তবায়ন ঘাটতির কারণে এমনটা হচ্ছে।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে শনিবার (০৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে এসব জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘ঢাকা শহরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক তাদের গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ১৫ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের কাছে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় টিআইবির ১৫ দফা সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো-সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে এডিস মশাসহ অন্যান্য মশা নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। সব অংশীজনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুস্পষ্ট করা হবে।

জাতীয় কৌশল ও কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে মশকনিধনে নিজস্ব পরিকল্পনায় ওষুধ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করে দুই সিটি করপোরেশনকে একই সঙ্গে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

মশকনিধনে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন: মশার উৎস নির্মূল দুটি ভবনের মধ্যবর্তী জন-চলাচলহীন অংশে জমে থাকা পরিত্যক্ত বর্জ্য, ঝোপঝাড়, ড্রেন, ডোবা, নালা এবং খাল নিয়মিত পরিষ্কার করা, পরিবেশবান্ধব রাসায়নিক ব্যবহার। বছরব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

এছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালনায় একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজের অধীনে নিয়ে আসতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছর ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই (মে-আগস্ট) সব হটস্পট চিহ্নিত করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করতে হবে। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর