১৩ জুলাই, ২০২৩ ১৬:৪৯

বরিশালে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর চাপ

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ আরো বেড়েছে। সবশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী গত বুধবার হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৯৬ জন রোগী। এর আগে গত মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন ছিলেন রেকর্ড সংখ্যক ৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী। সরকারি এই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নেই সুবিধার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তেলাপোকা আর মশা মাছির উৎপাতে অতিষ্ট রোগী ও স্বজনরা। এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় বাইরে থেকে। কিনতে হয় বেশিরভাগ ওষুধ। ডেঙ্গু চিকিৎসার যন্ত্রপাতি না থাকায় গুরুতর রোগীদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে জনবল এবং যন্ত্রপাতি দেয়া হলে এখানেই ডেঙ্গু চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক। 

পরিচালক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী। ৩ জন কমে গত বুধবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৯৬ জন। এর আগে গত সোমবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৯৭ জন। 

জুনের শেষদিক থেকে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালে। সে অনুযায়ী কোন পূর্ব প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। প্রথম দিকে সাধারণ রোগীদের পাশে ডেঙ্গু রোগীদের রাখা হলেও গণমাধ্যমের সমালোচনার মুখে এখন আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝে, এমনকি বারান্দায় জায়গা দেওয়া হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের। বদ্ধ কক্ষগুলোতে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তাদের। নোংরা-অপরিচ্ছন্ন ওয়ার্ডগুলো তেলাপোকা আর মশা-মাছির নিরাপদ আবাসে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রোগী ও সংশ্লিষ্টরা। প্রকট দুর্গন্ধে ওয়ার্ডে দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা রোগীর।

চিকিৎসাধীন রোগীরা জানান, ডাক্তার-নার্সরা ডেঙ্গু রোগীদের তেমন খবর নেন না। ডাকলেও তাদের পাওয়া যায় না। তারা তদরাকি বাড়ালে রোগীরা আরও দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারতেন বলে ধারণা রোগীদের। এদিকে গুরুতর ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ‘সেল সেপারেটর’ যন্ত্র না থাকায় একটু অবস্থা খারাপ হলেই রোগীদের ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকরা। এতে বিপাকে পড়েন অনেকে। তারা এই হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। 

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। রোগীর চাপ প্রতিদিন বাড়ছে। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু রোগীর চাপ আরও বাড়তে পারে আশংকায় আরো ১শ’ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ধারণ ক্ষমতার ১০ গুণ রোগী এবং তাদের সাথে অতিরিক্ত ভিজিটরের কারণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা যায় না। কর্তৃপক্ষ পরিচ্ছন্ন করে তারা আবার নোংরা করে। প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি পেলে এই হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সম্ভব বলে তিনি জানান। 

গুরুতর ডেঙ্গু রোগীর রক্তের প্লাটিলেট ভেঙে গেলে তার চিকিৎসায় ‘সেল সেপারেটর’ যন্ত্র অত্যাবশ্যক। বরিশাল বিভাগে এই যন্ত্র নেই। মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চাহিদাপত্র দিয়েও এই যন্ত্রটি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর