১৭ জুলাই, ২০২৩ ২০:১২

ডেঙ্গু আতঙ্কে জবি শিক্ষার্থীরা

জবি প্রতিনিধি

ডেঙ্গু আতঙ্কে জবি শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পানি নিষ্কাশনের নেই কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা । ফলে প্রতিনিয়তই ক্যাম্পাসে বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। ক্যাম্পাসের অধিকাংশে ড্রেনে জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভা সৃষ্টি হচ্ছে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

আজ সোমবার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, যথাযথ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানের ড্রেনগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে এডিস মশা জন্মানোর উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এসব ড্রেনে সবসময়ই জলাবদ্ধতা লেগে থাকে এবং কয়েকটি স্থানে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ দেখা যায়।

জলাবদ্ধ স্থানগুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের পিছনে, ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় ফটকমুখী রাস্তার বামদিকে, রফিক ভবনের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে, বিজ্ঞান অনুষদের দুইদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরির সামনে, প্রধান ফটকের রাস্তার দুই পাশে, কলা অনুষদের সামনের অংশের ড্রেনগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে এসব জমে থাকা পানি দেখা যায়। 

তবে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু মশার প্রজনন উপযোগী জায়গা দেখে গেছে, ক্যাম্পাসের কলা অনুষদ ভবন, নতুন একাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান অনুষদসহ প্রতিটি ভবনের ছাদে জমে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং পুরাতন ভাঙা অব্যবহৃত পাত্রগুলোতে। 

শুধুমাত্র ড্রেনগুলোর চিত্রই এমন নয়,  বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র বোটানিক্যাল গার্ডেনের কোল ঘেঁষে স্তূপ হয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। ছাত্রীদের কমনরুমের পেছনে দেখা গেছে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ যেখানে প্রতিনিয়ত জন্মাচ্ছে এডিস মশা। এছাড়াও ভাষা সৈনিক রফিক ভবনের পাশে, প্রশাসনিক ভবনের আশেপাশে, বিজ্ঞান অনুষদের আশেপাশের ড্রেনসহ প্রত্যেকটি ড্রেনে একটু বৃষ্টি হলেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

এদিকে ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া ড্রেনগুলোতে জমে থাকা পানিতে বিভিন্ন ধরনের মশা-মাছি এবং পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। এতে করে ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, দিনের বেলায় ক্যাম্পাসে মশার কামড়ে বসা যায় না। বিকেল ঘনিয়ে আসলে তো এখন কথাই নেই মশার উপদ্রবে ক্যাম্পাসের শান্ত চত্বর, গুচ্ছ ভাস্কর্য, বটতলা, কাঁঠাল তলা, মুজিব মঞ্চসহ সবগুলো স্থানে মশার আক্রমণে কেউ আড্ডা দিতে পারছে না। সন্ধ্যার আগে সবাই ডেঙ্গুর ভয়ে চলে যাচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল শাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ড্রেনগুলোতে  দীর্ঘদিন যাবৎ ময়লা পানি জমে আছে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পানি থেকে দুর্গন্ধ আসে। এ ধরনের আবদ্ধ পানি থেকে এডিস মশা উৎপন্ন হতে পারে। যা আমাদের ডেঙ্গু ঝুঁকিতে ফেলবে। এমনিতেই আমাদের বেশিরভাগ সহপাঠী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কয়েকদিন আগেই দেখেছি ক্যাম্পাসে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান হয়েছে। অথচ ক্যাম্পাসে বেশিরভাগ অংশ এখনো ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে। ক্যাম্পাস পুরোপুরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করে ঢালাওভাবে এমন প্রচার-প্রচারণা করে লাভ কি। প্রত্যেকটা ড্রেনে পানি জমে আছে যা থেকে এডিস মশা উৎপন্ন হবে এবং আমাদের ডেঙ্গু আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করছি দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ ড্রেনগুলোর অবস্থা নাজেহাল। আমরা নতুন করে ড্রেনগুলো সংস্কার কাজে হাতে নিয়েছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে দ্রুত সময়ে সেটা সরানোর ব্যবস্থা করছি। শীঘ্রই ক্লিনার টিম ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্পন্ন করবে।

এছাড়াও তিনি বলেন, ভবনের ছাদে যে মশার আবাসস্থল আছে এ সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর