২০ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:৩৬

কুষ্টিয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি, নভেম্বরেই ১২ জনের মৃত্যু

জাহিদুজ্জামান, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি, নভেম্বরেই ১২ জনের মৃত্যু

মৌসুমের শেষে এসে কুষ্টিয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এ বছরে যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার অর্ধেকই মরেছে চলতি নভেম্বর মাসে। আর দু’ একদিনের মধ্যেই জেলায় রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ছুঁয়ে ফেলবে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, এই মুহূর্তে জেলায় ১৩৬ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৫ জন রোগী। গত জুন মাসে প্রথম ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায় এই হাসপাতালে। ২০ নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৩ হাজার ৯২৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ায় প্রথম ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয় গত জুলাই মাসে। সে মাসে এবং পরবর্তী মাসে একজন করে ডেঙ্গু আক্রান্তের মৃত্যু হয়। পরে সেপ্টেম্বরে ৬ এবং অক্টোবরে ৪ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু এই নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, যেসব রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর দেরীতে হাসপাতালে আসছে, ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতিতে পড়ে মাথায় রক্তক্ষরণ হয়ে তাদের মৃত্যু হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে মৃত্যুহার বেড়ে যায়। আর এখন এমন রোগী আসছে বেশি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার বলেন, প্রথমে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে ২০ বেডের একটি ইউনিট করা হয়েছিল ডেঙ্গু রোগীদের জন্য। এখন সেখানে জায়গা না হওয়ায় আরও দুটি কক্ষ যুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে, মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মশারি ছাড়া দিনের বেলা না ঘুমানোর পরামর্শ দেন ডাক্তার তাপস এবং জ্বর আসলে ডাক্তারের কাছে আসতে বলেন।

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও মশা নিধনে কুষ্টিয়া পৌরসভা বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছেন কুষ্টিয়ার মানুষ। পৌরসভার পাশের বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, দিনের বেলাতেও রাস্তায় দাঁড়ানো যায় না। মনে হচ্ছে এই পৌর এলাকায় যেন মশার চাষ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা খুবই তৎপর ২১টি ওয়ার্ডে ২টি করে স্প্রে মেশিন দিয়ে প্রতিদিন বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কাজ করছে পাঁচটি ফগার মেশিন। তারপরও মশা নিধনে পৌর নাগরিকদের পরামর্শ চেয়েছেন তিনি।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেছেন, সপ্তাহব্যাপী আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছি। এতে স্টুডেন্ট, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে যুক্ত করেছি। পৌরসভাকে চিঠি দিয়েছি। মাসিক উন্নয়ন সভায় মৌখিকভাবেও বলা হয়েছে। কিছু পয়েন্টে পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিতেও বলা হয়েছে, ড্রেনগুলোতে ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সবাই এগিয়ে না আসলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যার যার এলাকা আঙিনা পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর