২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৩

জাপানের সঙ্গে চুক্তিতে বাংলাদেশ লাভবান হবে : বাণিজ্য সচিব

অনলাইন ডেস্ক

জাপানের সঙ্গে চুক্তিতে বাংলাদেশ লাভবান হবে : বাণিজ্য সচিব

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সই হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার।

উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপের প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জাপানের একটি প্রতিনিধিদল।

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) শেষ পর্যন্ত কী সম্পাদিত হবে, নাকি আটকে যাওয়ার শঙ্কা আছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। কারণ প্রথমবারের মতো জাপানের মতো একটি বড় দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সই (ইপিএ) নিয়ে সত্যিকারের কোনো আলোচনা করতে যাচ্ছে। জাপান একটি উন্নত দেশ, অনেক বড় অর্থনীতি, তাদের সঙ্গে আমরা অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে যাচ্ছি। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের মতো ছোটোখাটো অনেক অর্থনীতির সঙ্গে ইপিএ নিয়ে আলোচনা করেছি।

চূড়ান্তভাবে এ চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু এমন প্রশ্নের জবাবে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশ মানেই শেষ নয়। চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার লক্ষ্যেই দুই দেশ যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার বিষয়ে ঘোষণা দেয় এবং তিন রাউন্ডের সভা শেষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন যা আজকে প্রকাশ করা হলো।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে উভয় দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি সই হবে।

তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তাদের সঙ্গে এ সম্পর্কিত আলোচনায় যাওয়া যায় কিনা; আমরা কেবল সেই চেষ্টাই করেছি। সম্প্রতি আমরা ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু তা ছিল অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)। খুবই সীমিত সুযোগ। ধরেন, আমরা কিছু পণ্য বাছাই করি, যেগুলো তাদের শুল্কমুক্ত করে দেবো, তারও আমাদের এভাবে কিছু পণ্য দেবে। এখানে অন্য কোনো সুযোগ থাকবে না। কিন্তু জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) কেবল বাণিজ্যের মধ্যেই সীমিত থাকবে না, এখানে বিনিয়োগ, সরকারি ক্রয়সহ সেবাখাতেও বিনিয়োগ হবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রফতানি বাজার সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জাপান সফরকালে উভয়দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে-কে Strategic Partnership হিসেবে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে সমঝোতা স্মারক সই হয়। পরে জাপানের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালেও আর একটি সমঝোতা সই হয়।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, এ চুক্তি থেকে দুইপক্ষ কী পরিমাণ লাভবান হবে, সেটা আগে বলা কঠিন। তবে এটি কেবল শুল্কের সঙ্গেই সম্পর্কিত না, সেবাখাত, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নতকরণসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। এ চুক্তি থেকে জাপান-বাংলাদেশ দুদেশই লাভবান হবে। ২০২৬ সালের মধ্যেই চুক্তিটি করতে হবে। যে কারণে বর্তমান পরিস্থিতি একটু ভিন্ন।

প্রসঙ্গত, উভয় দেশ প্রস্তাবিত ইপিএ সম্পাদনের লক্ষ্যে Scope এবং Coverage হিসেবে ১৭টি সেক্টর চিহ্নিত করে। সরকারি, বেসরকারি, একাডেমিয়া ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট-এ (www.mincom.gov.bd) পাওয়া যাবে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর