১৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৬:৪৬

স্বর্ণালংকার পরিবহনে পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি বাজুসের

অনলাইন ডেস্ক

স্বর্ণালংকার পরিবহনে পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি বাজুসের

স্বর্ণালংকার পরিবহনের সময় প্রতিষ্ঠানের চালানের কপি এবং বহনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও বাজুসের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন কোনোরূপ হয়রানি না করে তার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এ দাবিসহ ছয়টি প্রস্তাবনা মন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে বাজুসের পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দপ্তরে তার সঙ্গে বাজুস প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি গুলজার আহমেদ, মো. রিপনুল হাসান, মাসুদুর রহমান, মো. জয়নাল আবেদীন, সমিত ঘোষ, সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য পবিত্র চন্দ্র ঘোষ, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাজুসের কিছু সমস্যা নিয়ে আমরা উনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে বৈঠক করেছি। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। বাজুসের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে বাংলাদেশে ৪০ হাজার জুয়েলারি দোকানমালিক আমাদের একই ছাতার নিচে এসেছেন। আমরা বিভিন্ন সংকট পার করেছি। মন্ত্রী মহোদয় অতীতেও সুন্দর ভূমিকা রেখেছেন, আগামীতেও উনি আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে আমরা স্মার্ট জুয়েলারি ব্যবসায়ী হতে চাই। এজন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন নীতিমালা দিয়েছেন। সেই নীতিমালা অনুযায়ী আমরা স্বর্ণ রপ্তানি করতে পারব, আমদানি করতে পারব। এই আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু আইনগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যার কারণে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা স্বর্ণের মূল্যটা নির্ধারণ করতে পারি না।  

তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবং বাজুস যেভাবে কাজ করছে, আমাদের সমন্বয়ে আগামী দিনে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আমরা নিরসন করতে পারব। আমাদের মূল সমস্যা ছিল স্বর্ণ পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় পুলিশি হয়রানি হয়, তাঁতীবাজারে আমাদের ছোট, বড়, মাঝারি শিল্প কারখানায় অর্নামেন্টস (অলংকার) তৈরি হয়। সেখানে পুরাতন স্বর্ণ নিয়ে নতুন স্বর্ণ তৈরি হয়ে আসে, আসা-যাওয়ার সময় আমাদের কিছু হয়রানি হয়। যে বিষয়ে আমরা মতবিনিময় করেছি। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় বাজুসের সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। সেই জায়গার আইন-শৃঙ্খলা কমিটিগুলোতে বাজুসের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে অন্তর্ভুক্ত রেখে,... স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে কাজ করবে, এই কথাটা আমরা বলেছি। মন্ত্রী মহোদয় সদয়। উনি আগেও আমাদের সহযোগিতা করেছেন।

বৈঠকে বাজুসের পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। প্রস্তাবনায় বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় জুয়েলারি শিল্পের অনেক সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান হওয়ায় বাজুসের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতেও বাজুসের যে কোনো সমস্যা সমাধানে আপনার আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

বাকি প্রস্তাবনাগুলো হলো- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্সে বাজুসের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা; বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে চোরাচালানবিরোধী কার্যক্রমে বাজুসের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা; জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটিতে বাজুসের জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করা; এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্বর্ণ পরিবহনের ক্ষেত্রে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক প্রায়ই হয়রানির শিকার হয়। এক্ষেত্রে স্বর্ণালংকার পরিবহনের সময় প্রতিষ্ঠানের চালানের কপি ও বহনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও বাজুসের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন কোনোরূপ হয়রানি না করে তার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং এবং সারাদেশে জুয়েলারি দোকানে এ যাবত অনেক চুরি-ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এসব ঘটনায় বর্তমান আইন অনুযায়ী সাধারণ চুরির মামলা হিসেবে থানা গ্রহণ করে। যেহেতু স্বর্ণ একটি মূল্যবান ধাতু, তাই আইন পরিবর্তন করার জন্য প্রস্তাবনা পেশ করছি, পাশাপাশি অতীতে সংঘটিত অপরাধ তদন্তে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর