শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়েছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল। দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থলে ঠাঁই নেওয়ার কারণে জানমালের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেলেও ঘূর্ণিঝড় অনেক সীমাবদ্ধতাকে একই সঙ্গে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। উপকূল এলাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়স্থল নির্মিত হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় আরও অনেক আশ্রয় কেন্দ্রের নির্মাণ যেমন নিশ্চিত করতে হবে তেমনি সেগুলো যাতে মানসম্মত হয় সে বিষয়টিও দেখা দরকার। উপকূল রক্ষায় যেসব বাঁধ দেওয়া হয়েছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে যে ঘাটতি আছে সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার। উপকূলীয় এলাকায় বনায়নের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আঘাত সামাল দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল দুই দশক আগে। জগাখিচুড়ি ও সমন্বয়হীনতার কারণে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হতে পারেনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের নিত্যসঙ্গী। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় এ দেশের মানুষকে। বাংলাদেশ যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা সেহেতু দুর্যোগ মোকাবিলায় আরও বেশি প্রস্তুতি থাকা উচিত। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য আশ্রয়স্থল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। সাধারণ অবস্থায় এগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের সময় ব্যবহৃত হবে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে। দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বাঁধ নির্মাণ এবং সবুজ বেষ্টনী তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্যোগ-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা কাজে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য প্রশিক্ষণেরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার। উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায়, দুর্গতদের পাশে শুধু সরকার নয়, সব সামাজিক শক্তিকে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। দুর্যোগকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহসহ অন্যান্য পদক্ষেপও নেওয়া দরকার।

সর্বশেষ খবর