শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম

রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এখন চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য। বিশেষত ওয়ারী এলাকার প্রায় প্রতিটি ব্যবসায়ী তাদের দৌরাত্দ্যের শিকার। চাঁদা না দিয়ে কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষে ব্যবসা চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়িওয়ালারাও চাঁদাবাজদের হাতে নিয়মিত বখরা পৌঁছে দিতে বাধ্য হন। বিশেষত, চাঁদাবাজ নামধারী মাস্তানচক্রের কাছে অসহায় ওয়ারী এলাকার ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা। সরকারকে দেওয়া করের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় থাকলেও চাঁদাবাজদের কাছ থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় যেন নেই। পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হয় কর আদায়ের মতো। ওয়ারী এলাকায় লাভ হোক আর না হোক প্রতি মাসে এক হাজার টাকা তুলে দিতে হয় চাঁদাবাজদের হাতে। কেউ আপত্তি করলে দোকান ভাঙচুর করে দাপট দেখানো হয়। কখনো কখনো রাতে ব্যবসায়ীর লাগানো তালায় সুপার গ্লু ঢেলে বিকল করা হয়। পর দিন ব্যবসায়ী তালা ভেঙে দোকান খোলার চেষ্টা করলে চাঁদার পরিমাণ হাজার থেকে লাখ টাকায় চলে যায়। ওয়ারীর ধোলাইখাল, নারিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় সুসংঘবদ্ধ চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। চাঁদাবাজরা তাদের চাঁদার একাংশ পুলিশকে দেয়- এমন রটনা রয়েছে এই এলাকায়। পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি অস্বীকার করলেও চাঁদাবাজদের প্রতি তাদের নমনীয় মনোভাব ওপেন সিক্রেট হিসেবে বিবেচিত। রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় চাঁদাবাজদের তৎপরতা চললেও তাদের নিস্পৃহ ভূমিকা রহস্যজনক। তা যেন আইনশৃঙ্খলার হতশ্রী অবস্থারই জানান দিচ্ছে। গত নির্বাচনে মহাজোটের বিপুল জয়ের পেছনে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ঘটানোর প্রতিশ্রুতি সিদ্ধান্তসূচক ভূমিকা পালন করেছে। আশা করা হয়েছিল সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দমনে প্রশাসন সক্রিয় হবে। কিন্তু ক্ষমতার পটপরিবর্তনে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের পরিবর্তন ছাড়া আর কোনো উন্নতি হয়নি। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে এই বিড়ম্বনার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর