শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৩ ০০:০০ টা

সংলাপ অনিশ্চয়তা

নির্বাচনে সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার ও বিরোধী দলের সংলাপের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এতকাল বলা হতো বিরোধী দল সংলাপকে অগ্রাহ্য করছে। তারা সংসদ বর্জন করে সে পথে কার্যত কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে। এমনকি সংসদের বাইরে বিরোধী দল সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আদৌ আগ্রহী কিনা তা নিয়েও সংশয় ছিল। কিন্তু বন্ধু দেশগুলোর কূটনীতিকদের দূতিয়ালী, জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতের বাংলাদেশ সফর ও নানামুখী তৎপরতা বিরোধী দলের মনোভাবে কিছুটা হলেও ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। সংলাপের ব্যাপারে তারা এখন স্পষ্টতই আগ্রহ দেখাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হলে বিরোধী দল তাতে ইতিবাচক সাড়া দেবে এমন আভাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যেন হঠাৎ করেই পিছুটানের প্রয়াস চলছে। এতদিন সংসদে অথবা সংসদের বাইরে সংলাপের প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখন সরকারি দল বলছে বিরোধী দলের কিছু বলার থাকলে তা সংসদে এসে বলতে হবে। প্রস্তাব দেওয়া সংঘাত পরিহার করে সংলাপে বসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিরোধীদলীয় নেতাদের আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধার যে কড়া নীতি সরকার গ্রহণ করছে তা সংঘাতের আশঙ্কাকে জোরদার করছে। বিরোধীদলীয় নেতাদের গ্রেফতারের জন্য এমন সব অভিযোগ খাড়া করা হচ্ছে, তা অভিযোগকারীদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য কিনা, সে প্রশ্নও দেখা দিচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হলে অন্য কোনো মামলা দেখিয়ে কারাগারের ফটক থেকে আবার গ্রেফতার করার প্রবণতাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ অসহিষ্ণু মনোভাবে সরকার ও বিরোধী দলের দূরত্ব বাড়াচ্ছে। আমরা মনে করি, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার ও বিরোধী দলকে সংলাপে বসতে হবে। সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় এমন নির্বাচনী রোডম্যাপ উদ্ভাবনেও উদ্যোগী হতে হবে। আমরা মনে করি, সংলাপের উদ্দেশ্যে বিরোধী দলকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগও নিতে হবে। বুঝতে হবে অনর্থক সংঘাতে কোনো কল্যাণ নেই, তাতে শুধু সংকটই বাড়ে।

সর্বশেষ খবর