সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

চৌর্যবৃত্তির কারখানা!

গরিব মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে প্রতিটি সরকারের আমলে কাজের বিনিময়ে খাদ্য, টেস্ট রিলিফ, খয়রাতি সাহায্য ইত্যাদি নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। অভাবি মানুষের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার নামে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হলেও এগুলো যে লুটপাটের কর্মসূচি তা স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবও প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন। রাজধানীতে উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেছেন, এগুলো হলো চৌর্যবৃত্তির কারখানা। এগুলোতে কোনো কাজ হয় না। এসব খাতের বরাদ্দ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব এসব খাতের অর্থ পরিকল্পনা করে অন্য খাতে ব্যবহারের সুপারিশ করেন। আমরা এ কলামে ইতোপূর্বে পিআর, জিআর, কাবিখা ইত্যাদি খাতের লুটপাট সম্পর্কে আমাদের মতামত জানিয়েছি। গরিব ও হতদরিদ্র মানুষকে সহায়তা করার নামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও তার সুফল গরিবদের কাছে পেঁৗছাচ্ছে না। এসব খাতের বরাদ্দকৃত অর্থের শতকরা এক শতাংশ সত্যিকারের গরিব ও অভাবী মানুষের কাছে পেঁৗছে কিনা সন্দেহ। গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত টিআর, জিআর ও কাবিখার অর্থ আত্দসাতের জন্য ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সংসদ সদস্যদের দ্বন্দ্বের কারণটিও খুব স্পষ্ট। গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ বা খাদ্য লুটের সুযোগ কার হাতে থাকবে তা নিয়েই কথিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। আমাদের মতে, টিআর, জিআর ও কাবিখা নিয়ে যে লুটপাট চলছে বছরের পর বছর ধরে তার অবসান হওয়া দরকার। বন্ধ হওয়া দরকার রিলিফ বা খয়রাতি সাহায্যের সংস্কৃতি। জনগণের ট্যাঙ্রে টাকার একাংশ টিআর, জিআর, কাবিখার নামে হরিলুট হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। গ্রাম এলাকার গরিব মানুষের কল্যাণে জবাবদিহিতাহীন এসব প্রকল্পের বদলে বিকল্প কিছু করার বিষয়ে ভাবা যেতে পারে। ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলাসহ স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভাবমূর্তির জন্য টিআর, জিআর ও কাবিখা কর্মসূচি কলঙ্ক তিলক হয়ে আত্দপ্রকাশ করেছে। এ কলঙ্ক মোচনে 'এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই' সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে।

সর্বশেষ খবর