শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

নাগরিকসেবার চালচিত্র

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ছিল মহাজোটের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। এ সরকারের পাঁচ বছরে এ প্রতিশ্রুতি পালনে তারা কতটা আন্তরিকতা দেখিয়েছে তা একটি প্রশ্নের বিষয়। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ২০০৭ সালের প্রথমার্ধে পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি। ওয়ান-ইলেভেনের বহুল বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আয়োজন করলেও অজ্ঞাত কারণে ঢাকা সিটির ব্যাপারে অনীহা দেখায়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আশা করা হয়েছিল, দ্রুত ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এ সরকারের আমলে মেয়াদোত্তীর্ণ সিটি করপোরেশন থেকে যায় বহাল তবিয়তে। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকাকে বিভক্ত করে আলাদা দুটি সিটি করপোরেশনে রূপান্তর করা হয়। বিভক্ত দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে নির্বাচন স্থগিত হয়ে আছে নানা অজুহাতে। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের বৃহত্তম দুই স্থানীয় সরকার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। জনপ্রতিনিধিদের অবর্তমানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমে চলছে বিশৃঙ্খলা ও অচলাবস্থা। নাগরিকসেবার দোহাই দিয়ে ঢাকাকে বিভক্ত করা হলেও সে সেবাই উধাও হয়ে গেছে বিদ্যমান বিশৃঙ্খল অবস্থার কারণে। মশা নিধন, রাস্তাঘাট সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোনো কাজেই নেই প্রত্যাশিত গতি। বছরজুড়েই চলছে রাস্তাঘাট খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব। খানাখন্দে ভরা রাজধানীর প্রায় সব সড়ক। জন্ম, মৃত্যু, নাগরিক সনদ পেতে নগরবাসীকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। উৎকোচ ছাড়া এগুলো পাওয়াও দুরাশার শামিল। বলা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন দুর্নীতি ও অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জনদুর্ভোগ চরমে উঠলেও তা দেখার কেউ নেই। জবাবদিহিতা না থাকায় আমলাতান্ত্রিক দুই সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে নাগরিকরা কি সেবা পাচ্ছে তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনই কেবল এ অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে পারে।

সর্বশেষ খবর