শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০১৪ ০০:০০ টা

ওদের সবাইকে ধরুন

চিকিৎসা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। আমাদের এই দেশে মানুষের অন্য সব মৌলিক অধিকারের মতো চিকিৎসার অধিকারও উপেক্ষার শিকার। শুধু উপেক্ষা নয়, চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে মানুষের পকেট কাটাকে একদল লোক পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। প্রশাসন ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখের সামনে তারা নির্বিঘ্নে বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারণার ব্যবসা। গত বুধবার রাজধানীর মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রবেশমুখে ডক্টরস চেম্বার নামের একটি তথাকথিত ক্যান্সার হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব সদস্যরা। অভিযানকালে কেমোথেরাপি দেওয়ার সময় র‌্যাব সদস্যরা সেখান থেকে এক ভুয়া নার্স এবং এক ওয়ার্ড বয়কে গ্রেফতার করে। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারকৃত দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ও তথাকথিত হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন। এখানে চিকিৎসাধীন ১২ জন রোগীকে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক স্টেনো টাইপিস্ট এই অবৈধ হাসপাতালটির মালিক। ১৫ বছর ধরে তারা অবৈধভাবে এই তথাকথিত হাসপাতাল চালিয়ে আসছে। জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে যেসব সরল-সোজা রোগী যায় তার একাংশকে ভাগিয়ে আনা হয় এখানে। ইনস্টিটিউটের কোনো কোনো চিকিৎসক সেখানে সিট নেই এই অজুহাতে তথাকথিত ওই ক্যান্সার হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে বাধ্য করেন। এ বাবদ তারা লাভ করে লোভনীয় কমিশনও। জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের দুজন ডাক্তারের সঙ্গে প্রতারকদের দ্বারা পরিচালিত এই তথাকথিত হাসপাতালের সংশ্লিষ্টতাও উদ্ঘাটিত হয়েছে। ঘাতক রোগ ক্যান্সার চিকিৎসার নামে যারা প্রতারণার ফাঁদ পাতে তারা মানুষ হিসেবে পরিচয়ের অধিকার রাখে কিনা সংশয়ের বিষয়। আমরা আশা করব, তথাকথিত ওই ক্যান্সার হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত সবাইকে র‌্যাব আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবে।

 

সর্বশেষ খবর