রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

অপরিচ্ছন্ন ঢাকা

সভ্য সমাজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে আপসহীন। ইসলাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নিজেদের আমরা সভ্য সমাজের অংশ হিসেবে ভাবি। রাজধানী ঢাকার দেড় কোটি অধিবাসীর ৯০ শতাংশেরও বেশি ইসলাম ধর্মাবলম্বী। কিন্তু দুনিয়ায় এমন নোংরা অপরিচ্ছন্ন মহানগরী দ্বিতীয়টি আছে কিনা আমাদের জানা নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিনে ঢাকাকে 'ময়লার ভাগাড়' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে আমরা কতটা অসচেতন এটি যেন তারই প্রতিকৃতি। রাজধানীবাসীর সেবার মান বাড়াতে বিগত মহাজোট সরকারের আমলে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। কিন্তু সেবার মান কতটা বেড়েছে তা শুধু দুই সিটি করপোরেশনের কর্তাদেরই জানা। ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার টন ময়লা-আবর্জনা জমে। এর মধ্যে ডিসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সর্বোচ্চ তিন হাজার টন পর্যন্ত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে। বাকি চার হাজার টন ময়লা-আবর্জনার ধকলে বেসামাল থাকেন নগরবাসী। হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিল্পকারখানা, ব্যবসা কেন্দ্র, কাঁচাবাজার, নির্মাণকাজ ও বাসাবাড়ির বর্জ্য পুরো রাজধানীর জন্যই মারাত্দক বিপর্যয় ডেকে আনছে। এসব ময়লা-আবর্জনার মধ্যে আবার ২০০ টন বর্জ্য থাকে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের। ব্যবহৃত সুচ, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, ওষুধের শিশি; স্যালাইন ও রক্তের ব্যাগ এবং রাসায়নিকসহ সব ধরনের চিকিৎসাজাত দ্রব্য অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য প্রায় ২০ শতাংশ প্রাণঘাতী রোগের জীবাণু বহন করে থাকে, এগুলো খুবই বিপজ্জনক। রাজধানীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার হাল হকিকত অনুমিত হয় প্রতিটি রাস্তার পাশে স্তূপাকারে অবর্জনা পড়ে থাকার দৃশ্যে। এমনকি দূতাবাসপাড়ার পাশেও বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পড়ে থাকে ময়লা-আবর্জনা। এসবের দুর্গন্ধে শুধু যে পথচারীদের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসার

উপক্রম হয় তা নয়, দেশের ভাবমূর্তির মুখেও কলঙ্ক লাগানো হয়। দুই কিম্ভূতকিমাকার সিটি করপোরেশনসহ দেশে এত কর্তৃপক্ষ থাকা সত্ত্বেও তা দেখার যেন কেউ নেই। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।

সর্বশেষ খবর