সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

ওদের মুখোশ উন্মোচন করুন

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে বেশ এগিয়েছে তা খালি চোখেও অনুভব করা যায়। গুরুতর বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা বিশেষত বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে দেশের মানুষ একসময় ছুটে যেত প্রতিবেশী ভারত কিংবা থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুরে। এখন হৃদরোগ, কিডনি, ক্যান্সারের মানসম্মত চিকিৎসা হয় এদেশে। রাজধানী ঢাকা শুধু নয়, অনেক জেলা শহরেও গড়ে উঠেছে মানসম্মত হাসপাতাল। এটি যেমন মুদ্রার এক পিঠ তেমনি এর বিপরীতে রয়েছে অন্ধকারাচ্ছন্ন আরেকটি দিক। চিকিৎসা খাতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশের সিংহভাগ মানুষ এখনো মানসম্মত চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। অপচিকিৎসার রামরাজত্বও চলছে এ দেশে। মাত্র কয়েক দিন আগে র‌্যাব সদস্যরা হানা দেয় মহাখালীর এক ভুয়া ক্যান্সার হাসপাতালে। হাসপাতাল নামধারী এ প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর ধরে দেশের রাজধানীতে এতগুলো কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে কীভাবে চালু ছিল তা সত্যিকার অর্থেই এক বিস্ময়। সে ঘটনার রেশ না কাটতেই শুক্রবার গভীর রাতে র‌্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর বাবর রোডের ১৬/১৪ নম্বর ভবনে হানা দিয়ে আবিষ্কার করেছে চিকিৎসার নামে মহাপ্রতারণার ঘটনা। 'ন্যাশনাল কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল' নামে এ প্রতিষ্ঠানে পঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা করা হতো। গ্রাম থেকে যেসব পঙ্গু রোগী আসত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে দালালদের সাহায্যে তাদের একাংশকে ফুঁসলিয়ে এ তথাকথিত হাসপাতালে ভর্তি করা হতো। এ হাসপাতালের যিনি অর্থোপেডিক্স সার্জন সেই রতনকৃষ্ণ পাঁচ বছর আগেও ছিলেন মাছ বিক্রেতা। অষ্টম শ্রেণী পাস সার্জন দেয়াল ফুটো করার ড্রিল মেশিন দিয়ে হামেশাই ছিদ্র করতেন রোগীর হাড়। এসএসসি পাস হাসপাতালের মালিক পাইক বাবু অপারেশনের আগে রোগীকে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দিতেন। পাইক বাবু এর আগে বিভিন্ন ভুয়া ক্লিনিকে কাজ করার পর নিজেই হাসপাতাল খুলে বসেন। কয়েক মাস আগে তিনি স্বাস্থ্য দফতর থেকে ৫০ শয্যার হাসপাতালের লাইসেন্সও পান। আমরা মনে করি এই ভুয়া হাসপাতালের হোতাদের যথাযথ শাস্তিই শুধু নয়, যারা তাদের হাসপাতাল করার অনুমতি দিয়েছে তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। উৎকোচের বিনিময়ে যারা প্রতারণার ব্যবসা করার লাইসেন্স দিয়েছেন তাদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া আরও বেশি জরুরি।

 

সর্বশেষ খবর