শনিবার, ১০ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

পর্যটক নিরাপত্তা

দুনিয়ার অনেক দেশ পর্যটন আয়ের ওপর নির্ভরশীল। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের তিনটিতে পর্যটন খাত অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে বিবেচিত। মালদ্বীপকে পর্যটনের বাইরে কল্পনা করাই কঠিন। নেপাল ও ভুটানের ক্ষেত্রেও তা একটি সত্যি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পর্যটন খাতে বাংলাদেশের আয় সবচেয়ে কম। অথচ পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো উপাদান বাংলাদেশে ধারেকাছের কোনো দেশের চেয়ে কম নয়। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণের আবাসভূমি সুন্দরবন দুনিয়ার যে কোনো পর্যটককে সম্মোহিত করার যোগ্যতা রাখে। দিনে কয়েকবার রূপ পাল্টায় এই অপরূপা বনভূমি। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত। কঙ্বাজারের সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য সত্যিকার অর্থেই তুলনাহীন। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় তো সম্মোহনী জাগানোর মতো দৃশ্যের অবতারণা করে। বাংলাদেশকে বলা হয় নদনদীর দেশ। দুনিয়ার কোনো দেশে এত বেশি নদনদী, খাল-বিলের অস্তিত্ব নেই। সবুজের এমন সমারোহও অন্য কোনো দেশে বিরল। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, ঝরনা ও লেকের সৌন্দর্য শুধু এ এলাকার সঙ্গেই তুলনীয়। সিলেটের চা বাগান সৌন্দর্যের আরেক লীলাভূমি। সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও ধারেকাছের প্রবাল দ্বীপগুলোর স্বপ্নময় পরিবেশ যে কোনো পর্যটককে মুগ্ধ করার যোগ্যতা রাখে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপ বলে দাবি করার যোগ্যতা রাখলেও পর্যটন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান নৈরাশ্যজনক। পর্যটনবান্ধব পরিবেশের অভাব এই অবাঞ্ছিত অবস্থার জন্য দায়ী। নিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাবে বিদেশি পর্যটক তো দূরের কথা দেশি পর্যটকরাও আস্থা খুঁজে পান না অনেক ক্ষেত্রে। দেশের প্রধান পর্যটন স্থল কঙ্বাজারে ১২৫০ জন পর্যটকের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে মাত্র একজন পুলিশ। সন্ধ্যার পর এ এলাকায় নিরাপত্তা সংকট তাই অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। দুনিয়ার দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আগমন নিশ্চিত করতে নিরাপত্তার দিকটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর