রবিবার, ২২ জুন, ২০১৪ ০০:০০ টা

বাড়িওয়ালাদের দৌরাত্ম্য

বাড়ি ভাড়া ২৫ হাজার টাকার বেশি হলে তা ব্যাংকের মাধ্যমে আদায়ের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে যে নিয়ম করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে বাড়িওয়ালা নামের একশ্রেণীর নব্য সাইলকরা। সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য বাড়িওয়ালাদের পক্ষ থেকে রাতারাতি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে। তারা দেনদরবার করছে অসৎ রাজনীতিক ও আমলাদের সঙ্গে। দেশের মহানগরগুলোতে গত কয়েক বছরে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে স্পুটনিক গতিতে। রাজধানীর দেড় কোটি অধিবাসীর মধ্যে সোয়া কোটিরও বেশি থাকেন ভাড়া বাড়িতে। তাদের অনেকেরই আয়ের সিংহ ভাগ চলে যাচ্ছে বাড়িওয়ালা নামের নব্য সাইলকের পকেটে। জনপ্রতিনিধি, সরকার কেউই বাড়িওয়ালাদের লালসার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হওয়াকে নিজেদের কর্তব্য মনে করেনি। প্রথমবারের মতো ২০১৪-১৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ২৫ হাজার টাকার বেশি বাড়ি ভাড়া হলে তা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধের নিয়ম রাখায় যারা লাখ লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া আদায় করেও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছিল সেই সাইলকরা হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাড়ি ভাড়াবিষয়ক নতুন পদ্ধতি চালু হলে কর ফাঁকি দেওয়া বাড়িওয়ালাদের চিহ্নিত করা যেমন সহজ হবে তেমন কারা ২৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া দেন তাও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে করের আওতায় বিপুলসংখ্যক নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ ঘটবে। পাশাপাশি কথায় কথায় বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির প্রবণতাও রোধ করা যাবে। আমরা মনে করি, বাজেটের বাড়ি ভাড়াবিষয়ক এ প্রস্তাব শুধু অক্ষুণ্ন রাখা নয়, তার আওতা আরও বাড়াতে হবে। সব ধরনের বাড়ি ভাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে আদায় করা যায় কি না সে বিষয়েও ভেবে দেখতে হবে। রাজধানীসহ দেশের বড় নগরগুলোতে যারা বাড়িওয়ালা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এদের এক বড় অংশই কালো টাকার মালিক। তাদের চাপের কাছে সরকারের নতি স্বীকার করার কোনো সুযোগ থাকাই উচিত নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি, তারা যে অর্থ আদায় করছেন তা যাতে ব্যাংকের মাধ্যমে আদায় করা হয় শুধু সে ব্যবস্থাটুকুই রাখা হয়েছে। আমরা আশা করব, এ ক্ষেত্রে সরকার কোনোভবেই আত্দসমর্পিতের ভূমিকা পালন করবে না। সরকার যে গুটিকয়েক সুবিধাভোগী লোকের বদলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পক্ষে তা প্রমাণ করার চেষ্টা হবে। আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।

 

 

সর্বশেষ খবর