শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় না ব্যাঙের ছাতা

দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। ছাত্র ভর্তি এবং সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে নেই কোনো নিয়মনীতি। যে পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলা হচ্ছে, সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় চালানোও দুষ্কর বললে অত্যুক্তি হবে না। দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে এ সিদ্ধান্ত আশাজাগানিয়া হয়ে দেখা দেয়। খুলে যায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার দ্বার। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাহাত্দ্য হারিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি ধারণ করেছে। বলা হয় এ ব্যবসায় অনায়াসে বিনিয়োগের কয়েকগুণ টাকা উঠে আসে। যে কারণে যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা তাদের দলভুক্ত লোকদের সুবিধা দিতে একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'লাইসেন্স' দিয়েছেন। আর এ 'লাইসেন্সের' বদৌলতে দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার মান। বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার বদলে মূলত সার্টিফিকেট ব্যবসাই চলছে। তাদের সাইলকসুলভ মনোভাবে প্রতিশ্রুতিশীল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বিঘ্নিত হচ্ছে। কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতিবাচক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। উচ্চশিক্ষাকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতি চলছে তা বন্ধে ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়নের সুপারিশও করেন তারা। কিন্তু এ সুপারিশ বাস্তবায়নে এ যাবৎ কোনো দৃষ্টিগ্রাহ্য উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংসদীয় কমিটির সর্বশেষ সভায় অবশ্য বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় কোনো অনিয়মকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। সন্দেহ নেই, দেশে উচ্চশিক্ষার দ্বার অবারিত করার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত বিশিষ্ট ভূমিকা রেখেছে। এ ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখতে এ সম্পর্কিত সব আইন-কানুনের যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রবণতা রোধ করতে হবে। প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ঠিকমতো চলছে কিনা নজর রাখতে হবে। মানসম্মত উচ্চশিক্ষা জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি। মানহীন শিক্ষা তার বৈপরীত্যই নিশ্চিত করে। যে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসানে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্ত যাতে ফ্রিজে পড়ে না থাকে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর