শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতিদানের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছে। পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকারের উচিত ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করা। বিরোধী দল লেবার পার্টির উত্থাপিত এ প্রস্তাবটিতে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের সিংহভাগ সদস্যই ভোট দেন। ব্রিটিশ সরকার পার্লামেন্টের এ প্রস্তাবটি মানতে বাধ্য না হলেও সরকারি দলসহ সব পক্ষের সিংহভাগ সদস্যের সমর্থনধন্য এ প্রস্তাবটি ব্রিটিশ সরকারের ওপর কিছুটা হলেও প্রভাব রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০১২ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে একটি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে ভোটের আয়োজন করলে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ব্রিটেন শেষ মুহূর্তে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব এমন এক সময় গ্রহণ করল যখন ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়ার পক্ষে জনমত গড়ে উঠছে। সুইডেন সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে তারা ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায়। ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার নেতা ইয়াসির আরাফাত ১৯৮৮ সালে আলজিয়ার্সে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন। এযাবৎ ১৩০টি দেশ ইসরায়েলকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ ১৯৭৪ সালে পিএলও পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ওপেক আরব লিগসহ বেশ কিছু মর্যাদাবান প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘে এমন মর্যাদার অধিকারী। ২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনকে তাদের সদস্য নয় এমন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ভ্যাটিকান সিটি এ ধরনের মর্যাদার অধিকারী। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হতে হলে ফিলিস্তিনকে আরও দৌড়ঝাঁপ করতে হবে। এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি লাগবে। প্রস্তাবটি ভোটাভুটিতে তোলার জন্য পরিষদের ১৫ সদস্যের অন্তত নয়জনের সমর্থন পেতেই হবে। ফিলিস্তিন এ পর্যন্ত এ ধরনের সমর্থন লাভে ব্যর্থ হয়েছে। ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে জাতিসংঘে একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের মধ্যে দুই রাষ্ট্রের ধারণাটি আলোর মুখ না দেখলে ওই সময়ের মধ্যে অন্তত ইসরায়েলের ৪৭ বছরের দীর্ঘ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হবে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতিসংঘ প্রস্তাবের ভিত্তিতে। প্রস্তাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন পাশাপাশি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এমন কথাই বলা হয়। ব্রিটেনের প্রস্তাবেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জাতিসংঘ। এ প্রস্তাব দুনিয়ার একটি প্রাচীন জাতি ফিলিস্তিনিদের উদ্বাস্তুর জাতিতে পরিণত করেছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রস্তাব এ উদ্বাস্তু জাতির জন্য সুবিচার নিশ্চিত করলে তা হবে ফিলিস্তিনিদের জন্য এক বড় অর্জন।

সর্বশেষ খবর