গজনী বংশের পতনের পর মুহম্মদ ঘুরী রাজপুতদের প্রবল বাধার সম্মুখীন হন। রাজপুতরা অত্যন্ত সাহসী ও পরাক্রমশালী ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো একতা ছিল না। মুহম্মদ ঘুরীর দ্রুত সাফল্যে দিল্লি ও আজমিরে চৌহানরাজ পৃথ্বীরাজ অত্যন্ত শঙ্কিত হলেন। তিনি এক বিরাট সেনাবাহিনী সংগ্রহ করে ঘুরী রাজ্যের বিরুদ্ধে অগ্রসর হলেন। ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে থানেশ্বরের প্রায় ১৪ মাইল দূরে তরাইন নামক স্থানে উভয় বাহিনী মিলিত হলো। কনৌজের রাজা জয়চন্দ্রের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকায় তিনি পৃথ্বীরাজকে সাহায্য করলেন না। কথিত আছে, পৃথ্বীরাজ বলপূর্বক জয়চাঁদের কন্যাকে বিয়ে করলে উভয়ের মধ্যে শত্রুতা বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়। পৃথ্বীরাজ নিজের শক্তি বৃদ্ধির জন্য রাজপুতদের তার পক্ষে সংঘবদ্ধ করেন। বহু রাজপুত বীর তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। যুদ্ধে মুসলমানরা পরাজিত ও বিতাড়িত হয়। এ যুদ্ধে মুহম্মদ ঘুরী তীরবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তরাইনের প্রথম যুদ্ধে বিপর্যয় সত্ত্বেও মুহম্মদ ঘুরী দমলেন না। তিনি শীঘ্রই এক শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করলেন এবং পর বছর (১১৯২ খ্রি.) আবার তরাইন প্রান্তরে রাজপুতদের সম্মিলিত বাহিনীর মোকাবিলা করলেন। এবার তার সৈন্যবাহিনীতে সৈন্য সংখ্যা ছিল ১,২০,০০০ এবং অশ্বারোহীর সংখ্যা ছিল ১২,০০০। এ যুদ্ধে পৃথ্বীরাজের সৈন্য সংখ্যা ছিল ৩ লাখ। সব রাজপুত সমরনায়ক স্ব স্ব সৈন্যবাহিনীসহ স্বদেশ রক্ষার জন্য মুহম্মদ ঘুরীর বিরুদ্ধে অমিতবিক্রমে দণ্ডায়মান হয়েছিলেন। উভয় পক্ষে ঘোরতর যুদ্ধ হলো। মুহম্মদ ঘুরী এ যুদ্ধে রাজপুতদের শোচনীয়ভাবে পরাজিত করলেন।