শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

জাতিসংঘের দূতিয়ালি

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে পরিস্থিতি উত্তরণে তার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও বিরোধী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিব দুই নেত্রীর কাছে চিঠি লিখলেও এই দূতিয়ালির প্রয়াস কতটা সফল হবে তা নিয়ে সংশয়ও কম নয়। কারণ বিদ্যমান সংকটের দুই পক্ষ সরকার ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলেই জাতিসংঘের উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু সরকার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনকে সন্ত্রাস বলে অভিহিত করছে। সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে পেট্রলবোমা হামলার নির্দেশদাতাদের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবেন না। একই যুক্তিতে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসানোর নাগরিক উদ্যোগকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তারা শর্ত দিয়েছে সংলাপ করতে হলে বিএনপি জোটকে সন্ত্রাস ও নাশকতার পথ থেকে সরে আসতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট জাতিসংঘের জন্য যে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা একটি বোধগম্য বিষয়। প্রথমত, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বড় সহায়। শান্তি সেনাদের বড় অংশই নেওয়া হয় বাংলাদেশ থেকে। দ্বিতীয়ত, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য জাতিসংঘের কাছে একটি মডেল। স্বভাবতই রাজনৈতিক সংঘাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হোক তা জাতিসংঘেরও কাম্য নয়। তবে জাতিসংঘ চাইলেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের গ্রন্থিমোচন হবে এমনটি আশা করার কোনো সুযোগ নেই। বিদ্যমান সংকট মোচনে দুই পক্ষকেই যত্নবান হতে হবে। ২০১৩ সালের শেষার্ধে দুই নেত্রী তথা দেশের দুই শীর্ষ দলকে সমঝোতায় আনার চেষ্টা করেছিল জাতিসংঘ। বান কি মুনের দূত হয়ে ফার্নান্দেজ সে সময় দৌড়ঝাঁপ কম করেননি। কিন্তু তাকে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। যাওয়ার সময় বলেছেন সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের নেতাদেরই করতে হবে। আমাদের মতে, এ উপলব্ধি এখনো প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। এ জন্য সর্বাগ্রে আপসহীনতা আর গোঁয়ারতুমির ঘেরাটোপ ছেড়ে শীর্ষ দুই দলকে জনস্বার্থের কথা ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর